বিজন দাস।
নৈহাটির পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে অসমের মঙ্গলদৈ-এর শান্তিপুরে, শ্বশুরবাড়ির পাড়ায় এসেছিলেন থাকতে, ব্যবসা করতে। বাড়ি ভাড়া নিয়ে একের পর এক ব্যবসায় হাত দেন। ধার করেন। কিন্তু সাফল্য আসেনি। শেষ পর্যন্ত কলকাতা যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে যে ইলাহাবাদের হোটেলে আত্মঘাতী হবেন স্বামী বিজন দাস, এ কথা ভাবতেও পারছেন না বেবি। বিজনবাবু ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল।
গানের রিয়্যালিটি শো’য়ে সুযোগ পেয়ে অনেক দূর এগিয়েছিল ছেলে বিবেক। সে মঙ্গলদৈ কমার্স কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। ছেলেকে গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন ছিল বিজনবাবুর। সেই প্রতিষ্ঠার ভার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে দিয়ে এবং দেশের অর্থ সঙ্কটের জন্য বিগত কংগ্রেস সরকার ও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে দায়ী করে পাঁচ পাতার সুইসাইড নোট লিখে গেলেন তিনি। স্ত্রী বলেন, “ওঁর পেনশনের টাকায় ইএমআই চলছিল। ব্যবসা না চলায় টানাটানি ছিল। উদাসীন থাকতেন। আমাকে কখনও কিছু জানিয়ে বা আলোচনা করে কাজ করতেন না। এ বারেও নিজে যা ভাল বুঝেছে করেছে।”
প্রতিবেশীরা জানান, কথাবার্তা শুনে মনে হত, বিজনবাবু কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের খবর পড়ে বিরক্ত ছিলেন। সম্ভবত তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে সুইসাইড নোটে। সেখানে টুজি স্পেকট্রাম থেকে শুরু করে আইএনএক্স মামলার উল্লেখ রয়েছে। তুলোধোনা করেছেন চিদম্বরম ও কংগ্রেস সরকারকে। কিন্তু স্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘মোদীকে চিঠি লিখে মরে গেলেই কি সমস্যার সমাধান হয়? এখন কি প্রধানমন্ত্রী সংসার চালাবেন? না ছেলেকে গান শেখানোর ভার সরকার নেবে?’’
শ্যালক গোপাল প্রয়াগরাজ থানা থেকে ফোনে জানান, গত বৃহস্পতিবার সরাইঘাট এক্সপ্রেসে হাওড়া যাবেন বলে বের হন বিজনবাবু। পর দিন ফোন করায় বলেন, ঝাড়খণ্ডে বোনের বাড়ি যাচ্ছেন। তার পর থেকেই বন্ধ ছিল মোবাইল। রবিবার হোটেল থেকে বাড়িতে ফোন করে দুঃসংবাদ জানানো হয়। ময়না-তদন্তের পরে প্রয়াগেই দেহ সৎকার করা হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানায়, বিভিন্ন ব্যবসায় হাত দিলেও কোনওটিই চালাতে পারেননি বিজন। শরীরও ভাল ছিল না। পাঁচ লক্ষ টাকা ধারও করেছিলেন। কিন্তু আত্মাভিমানী বিজনবাবু কারও কাছে মাথা নোয়াতে রাজি ছিলেন না। এমনকি, মৃত্যুর আগে হোটেল ভাড়া ও সৎকারের খরচ বাবদ ২০০০ টাকাও রেখে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy