Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
GST

জিএসটি বাড়ছে মোবাইলে, ধাক্কা কি দাম ও শিল্পে

এতে বাজারে মোবাইলের দাম বাড়বে বলে শিল্পমহলের মত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

মোবাইল ফোনে জিএসটি বাড়ছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে মোবাইল ফোন ও তার নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রাংশ কিনতে ১২ শতাংশের বদলে ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে। এতে বাজারে মোবাইলের দাম বাড়বে বলে শিল্পমহলের মত।

জিএসটি পরিষদের এই সিদ্ধান্তের পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নয়। মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে আসল ফোনের থেকে অনেক যন্ত্রাংশে জিএসটি-র হার বেশি ছিল। সেই অসঙ্গতি দূর করতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ রাজস্বসচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডের যুক্তি, এতে মোবাইলের দাম বাড়বে কি না তা নির্মাণকারী সংস্থাগুলির উপরে নির্ভর করছে। কারণ, কাঁচামালে জিএসটি বেশি হওয়ায় সেই খরচ মোবাইলের দামে ধরা হচ্ছিল। এতে সরকারের ঘরে সংস্থাগুলির পুঁজি আটকে থাকছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা একমত হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা শাওমি ইন্ডিয়ার এমডি মনু জৈনের মতে, এর ফলে মোবাইল শিল্প ভেঙে পড়বে। কারণ, এমনিতেই ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়ে যাওয়ায় মুনাফা কমছে। সবাই দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। করোনাভাইরাসের ধাক্কায় যন্ত্রাংশের জোগানও ব্যাহত হচ্ছে। ইন্ডিয়ান সেলুলার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পঙ্কজ মহিন্দ্রুর মতে, এতে মোবাইল ব্যবসা বিপুল মার খাবে।

একই অসঙ্গতি দূর করতে চটি-জুতো, বস্ত্র ও রাসায়নিক সারের উপরেও জিএসটি বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র নির্মলাকে চিঠি লিখে আপত্তি তুলেছিলেন। আজ কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের বাণিজ্যিক কর মন্ত্রী টি এস সিংহ দেওয়ের মতো বিজেপি-র রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীরাও আপত্তি তোলেন। তাঁদেরও যুক্তি, অর্থনীতির দশা বেহাল। এখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। তাই ঠিক হয়েছে, এ নিয়ে পরে আলোচনা হবে। বৈঠকে না-থাকলেও এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অমিত মিত্র ।

গত কয়েক মাস ধরেই মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যগুলিকে টাকা মিটিয়ে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছিল। অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে রাজ্যগুলিরও প্রত্যাশা মতো আয় হচ্ছে না। আবার কেন্দ্রের জিএসটি সেস বাবদ আয় কমে যাওয়ায় সেই তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এই সমস্যা মেটাতে আজ জিএসটি পরিষদ বাজার থেকে ধার করবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘এর আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখে সংসদের অধিবেশনের দু’তিন সপ্তাহ পরে ফের এ নিয়ে বৈঠক ডাকা হবে।’’ প্রয়াত অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন জিএসটি পরিষদের বাজার থেকে ধার নেওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। নির্মলা বলেন, ‘‘ধার নিলে কী গ্যারান্টি রাখা হবে, সুদের হার কী হবে, আর্থিক শৃঙ্খলার হিসেব কী ভাবে করা হবে এবং সব আইনি দিক খতিয়ে দেখা হবে।’’

কেন্দ্র সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিলেও এখনও ২০১৯-এর অক্টোবর-নভেম্বর বাবদ ১৪ হাজার ৩৬ কোটি টাকা এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি বাবদ ৩৩ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। নির্মলা বলেন, ‘‘চলতি বছরে সেস থেকে ৭৮ হাজার কোটি টাকা আয় হলেও ক্ষতিপূরণ বাবদ ১.২ লক্ষ কোটি টাকা মেটানো হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যের আয় কী ভাবে বাড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনাও হয় জিএসটি পরিষদে। জিএসটির তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামোয় ত্রুটির কারণেও আয় বাড়াতে সমস্যা হচ্ছে। এর দায়িত্বে থাকা ইনফোসিসের তরফে নন্দন নিলেকানি পরিষদকে জানান, তাঁরা ২০২১-র জানুয়ারির মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে ফেলবেন। তাঁকে এ বছরের জুলাইয়ের মধ্যে ওই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

GST Mobile Phones
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy