এক দিকে কাঁটাতারের বেড়া, অন্য দিকে কাঁটাতারের বাইরে ভারতীয় বসতি। কাছাড় সীমান্তে আজ এই ছবিই দেখলেন সাত সদস্যের বিধান পরিষদীয় দল। সঙ্গে অসমের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কেভি ইপিন ও পুলিশের এডিজি (সিআইডি) অনিলকুমার ঝা।
এই অবস্থা অবশ্য তাঁদের কারও অজানা নয়। তবু বালিছড়া থেকে টুকরগ্রাম পর্যন্ত কাছাড় জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘুরে বিধায়কদের মন্তব্য, জঙ্গি বা সাধারণ জনতার অনুপ্রবেশ ঠেকানো শুধু কাঁটাতারের বেড়া বসালেই হবে না। এর সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে, ওপারে কোনও ভারতীয় বসতি নেই। তাঁদের কথায়, সে জন্যই সরকার সম্পূর্ণ অনুপ্রবেশ-মুক্ত সীমান্ত সুনিশ্চিত করার জন্য কাঁটাতারের বেড়ার বাইরের পরিবারগুলিকে ভিতরে এনে পুনর্বাসন দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কাছাড়ে এই ধরনের পরিবারের সংখ্যা ১৭৬। তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য জমি অধিগ্রহণ এবং বন্টন প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জমিবিবাদের দরুন তা বিলম্বিত হয়। জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, এ জন্য ১৫ কোটি টাকার নতুন একটি প্রকল্প প্রতিবেদন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কাছাড়ের আন্তর্জাতিক সীমান্ত দেখতে আসা বিধায়ক প্রতিনিধি দলটিতে চারজনই বরাক উপত্যকার। তাঁরা হলেন কিশোর নাথ, অমরচাঁদ জৈন, নাজিমউদ্দিন চৌধুরী ও কৃষ্ণেন্দু পাল। বাইরের ছিলেন ফণীভূষণ চৌধুরী. জয়রাম ইংলেং ও গণেশ লিম্বু। তাঁরা সবাই আন্তর্জাতিক সীমান্তের নানা বিষয়ে বিএসএফের কাছাড়-মিজোরাম ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল এমএস জামোয়ালের সঙ্গে কথা বলেন। ফ্লাডলাইট, সড়ক, ফেন্সিং, পুনর্বাসন ইত্যাদি ব্যাপারেই মূলত তাঁদের কথা হয়।
বিধায়ক দলটি নাতানপুরে গিয়ে কাঁটাতারের বাইরে থাকা মানুষদের সঙ্গেও কথা বলে। সময় বেঁধে ভারতের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে পারা মানুষগুলি নিজেদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বিএসএফ-র বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না-থাকলেও গেটে আটকে থাকা যে কতটা অমানবিক, সেটা বিধায়ক-আমলাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, এই কারণে ছেলেমেয়েরাও স্কুলে যেতে চায় না। এর চেয়ে বড় সমস্যা বাংলাদেশিদের উতপাত। চুরি করে গরু-মহিষ নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন। বিধায়করা শীঘ্র পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন তাঁদের।
প্রতিনিধি দলটি নৌকোয় চেপে টুকরগ্রামে গিয়ে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি)-র অফিসারদের সঙ্গেও কথা বলেন।
নিজ নিজ সীমানায় দাঁড়িয়ে মত ব্যক্ত করেন উভয়পক্ষ। বিজিবি কর্তারা জানান, এই সীমান্তে কোনও সমস্যা নেই। গরু-মহিষ সীমান্ত পেরোলে ফ্ল্যাগ মিটিঙের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অগপ বিধায়ক ফণীভূষণ চৌধুরী পরে বলেন, টুকরগ্রামের দুই জায়গায় ১ হাজার ২০০ মিটার সীমান্ত খোলা রয়েছে। একদিকে ৩০০ মিটার, অন্যদিকে ৯০০ মিটার। সে জায়গা দ্রুত বন্ধের জন্য দাবি জানাবেন তাঁরা। কারণ ওইটুকু পথেও অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। বিএসএফের আইজি জামোয়াল অবশ্য বলেন, অনুপ্রবেশ সম্ভব নয়। তাঁর জওয়ানরা ওই অংশে ২৪ ঘণ্টার কড়া পাহারায় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy