প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় স্ত্রীকে নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছোটেন মধ্যপ্রদেশের রতলমের এক ব্যক্তি। কিন্তু অভিযোগ, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র জানিয়ে দেয় ভর্তি নেওয়া যাবে না। ফলে স্ত্রীকে নিয়ে ফিরে আসতে হয়। ফেরার পথে মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবার সেই একই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান তাঁর স্বামী। অভিযোগ, এ বারও তাঁদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেষমেশ ঠেলাগাড়িতে করে মহিলাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁর স্বামী। কিন্তু পথেই সন্তান প্রসব করেন মহিলা। তবে বাঁচানো যায়নি সদ্যোজাতকে। এই ঘটনার পরই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে।
গত ২৩ মার্চের ঘটনা। শুক্রবার সেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। সেখানে এক প্রসূতিকে ঠেলাগাড়ি করে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।) শুক্রবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই সাইলানার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক পিসি কোলিকে শো কজ় করা হয়েছে। নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই নার্স চেতনা চারেল এবং গায়ত্রী পতিদারকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২৩ মার্চ সাইলানার বাসিন্দা কৃষ্ণ গোয়ালার স্ত্রী নীতুর প্রসবযন্ত্রণা ওঠে। তাঁকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান কৃষ্ণ। সেই সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দায়িত্বে ছিলেন নার্স চেতনা। অভিযোগ, তিনি জানিয়ে দেন, প্রসবের সময় এখনও আসেনি। দু’তিন দিন দেরি আছে। এই বলে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে প্রসবযন্ত্রণা তীব্র হয় নীতুর। আবার তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন কৃষ্ণ। দ্বিতীয় বার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন নার্স গায়ত্রী। অবিযোগ, তিনি নীতুকে পরীক্ষা করে জানান, আরও ১৫ ঘণ্টা পর প্রসব হবে। তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পরই নীতুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কোনও গাড়ি না পেয়ে ঠেলাগাড়িতে করে স্ত্রীকে নিয়ে আবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হন কৃষ্ণ। কিন্তু মাঝপথেই সন্তান প্রসব করেন নীতু। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই অবস্থায় নীতু এবং সদ্যোজাতকে নিয়ে আসেন কৃষ্ণ। কিন্তু সদ্যোজাতকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসককে অভিযোগ জানান কৃষ্ণ। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে কৈফিয়ৎ চাওয়া হয় কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল। তার পরই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং দুই নার্সের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়।