গ্রাফিক—সনৎ সিংহ
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নিয়ে সংঘাত পৌঁছল দিল্লির দরবারে। সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে ধনখড় সম্পর্কে নালিশ জানালেন লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজ্যপাল বদল করা দরকার। সুদীপ আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি সংসদে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন ভাষণ দিতে এসেছিলেন। সেই সময়ে সেন্ট্রাল হলে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। সেই সুযোগেই সরাসরি কোবিন্দকে দলের দীর্ঘদিনের দাবির কথা বলে দেন সুদীপ। দেখা যায়, ভাষণ শেষে লোকসভা সাংসদের বসার প্রথম সারির আসনের দিকে এগিয়ে আসেন কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী-সহ বিভিন্ন দলের লোকসভার নেতারা বসেন যেখানে। সেখানেই আসন সুদীপের। রাষ্ট্রপতিকে প্রতি নমস্কার জানানোর সময়ে নিজের মাস্কটি খোলেন সুদীপ। সেই সময়ে কোবিন্দ সুদীপকে বলেন, ‘‘আপনাকে আজ বেশ হাসি হাসি মুখে দেখা যাচ্ছে।’’ এর পরেই কোনও ভনিতা না করে কাজের কথাটি বলে দেন সুদীপ। বলেন,‘‘কিন্তু স্যার, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে সরান। না হলে, সংসদীয় গণতন্ত্রের বিপদ হচ্ছে।’’ সেই সময়ে কোবিন্দের পাশেই ছিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু।
ধনখড় রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই বারবার তাঁর সঙ্গে সংঘাত বেধেছে রাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল মতান্তর সামনে এসেছে বারবার। আগেও দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে ধনখড়ের ‘কার্যকলাপ’ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে এসেছিলেন মমতা। তখন তাঁর অনুরোধ ছিল, ‘রাজ্যপালকে সংযত হতে বলুন।’ তবে এখন রাজ্যের সংসদীয় প্রধানের সঙ্গে শাসক দলের সম্পর্ক যেখানে গিয়েছে তাতে আর সংযত হওয়ার বার্তা নয়, বদলির আর্জি জানালেন সুদীপ।
রাজ্যপাল ও সরকারের সংঘাত বড় আকার নেয় গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে। রাজ্যপাল প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক টুইট করেন। পাল্টা তাঁকেও ‘বিজেপির লোক’ বলে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে শাসক দল। কিন্তু ধনখড় দমেননি। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতার শপথের দিনেও ভোট পরবর্তী গোলমালের কথা তুলে রাজ্যপাল তাঁকে খোঁচা দেন। এর পরে সম্প্রতি শিক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়। সেই সময়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ধনখড়কে সরানোর কথাও বলেন। হাওড়া পুরসভা নির্বাচনও কার্যত রাজ্যপালের জন্যই স্থগিত রয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ উঠলেও ধনখড় বরাবর একটাই দাবি করেছেন যে, তিনি অসাংবিধানিক কোনও কাজ করেননি। তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে কোনও বিষয়ে মতামত জানাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy