Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Krishnamurthy Subramanian

স্বাস্থ্য খাতে খরচ বৃদ্ধিরই সওয়াল

মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম সওয়াল করলেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি খরচ বাড়াতে হবে। তা হলে সাধারণ মানুষকে নিজের পকেট থেকে অনেক কম খরচ করতে হবে।

মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম

মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫০
Share: Save:

‘থ্রি ইডিয়টস’-এর রাজুর মা র‌্যাঞ্চো ও ফারহানের কাছে দুঃখ করে বলেছিলেন, তাঁর আয়ের অনেকটাই চলে যায় রাজুর বাবার চিকিৎসায়। ফলে রাজুর বোনের বিয়ের জন্য টাকা জমানো দূরে থাক, সংসারের খরচের জন্যই টাকা থাকে না। কোভিড অতিমারি থেকে শিক্ষা নিয়ে, ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর উদাহরণ দিয়ে আজ মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম সওয়াল করলেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি খরচ বাড়াতে হবে। তা হলে সাধারণ মানুষকে নিজের পকেট থেকে অনেক কম খরচ করতে হবে। তাঁর মতে, যদি সরকার জিডিপি-র ২.৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে খরচ করে, তা হলে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে খরচ অনেকটাই কমে যাবে। একেবারে ৬৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নেমে আসবে।

এত দিন বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মোদী সরকার আয়ুষ্মান ভারতের মতো স্বাস্থ্য বিমায় জোর দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় খরচ কমাচ্ছে। আমজনতাকে বেসরকারি হাসপাতালের ভরসায় ছেড়ে দিচ্ছে। আজ উল্টো পথে হেঁটে স্বাস্থ্য খাতে সরকারি খরচ বাড়ানোর কথাই বলেছে আর্থিক সমীক্ষা।

প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যোগ না-দেওয়ার জন্য দুষতেন। আজ আর্থিক সমীক্ষায় মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা দেখিয়েছেন, যে সব রাজ্য আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দিয়েছে, সেখানে কোনও না কোনও স্বাস্থ্য বিমার আওতায় থাকা পরিবারের হার ২৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৬ শতাংশ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো যে সব রাজ্য আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দেয়নি, সেখানে এই হার ১০ শতাংশ কমেছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিহার, অসম, সিকিমের মতো প্রতিবেশী রাজ্যের তুলনা করেও একই ফল পেয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম। তাঁর বক্তব্য, আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দেওয়া রাজ্যগুলিতে নবজাতক-শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ক্ষেত্রেও উন্নতি দেখা গিয়েছে।

কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এবং বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবায় যে খামতি থেকে যাচ্ছে, তা-ও আর্থিক সমীক্ষায় স্পষ্ট। সুব্রহ্মণ্যমের বক্তব্য, বেসরকারি হাসপাতালে বেশি খরচ করতে হলেও ভাল মানের স্বাস্থ্য পরিষেবার গ্যারান্টি নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী আয়ুষ্মান ভারতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার চিকিৎসা সব থেকে বেশি হচ্ছে। কিন্তু হৃদ্‌যন্ত্রের অস্ত্রোপচার কম হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অর্থ হল, বেসরকারি হাসপাতালগুলি সরকারি স্বাস্থ্য বিমায় বড় মাপের চিকিৎসা এড়িয়ে যাচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারতের মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গে সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই সমস্যার মুখে পড়ছেন। বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিং হোমগুলি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখলে রোগী ভর্তি করাতে চাইছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই কারণেই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কিছু নিয়ন্ত্রণ দরকার। তা পুরোপুরি বাজারের উপরে ছেড়ে দিলে চলছে না।

অন্য বিষয়গুলি:

economy Krishnamurthy Subramanian
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE