দুর্ঘটনায় ‘ব্রেন ডেড’ হয়ে গিয়েছে যুবকের। মৃত্যুশয্যায় থাকা প্রেমিককে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তাঁর মোবাইল চুরি করে ৩২ লক্ষ টাকা নিজের বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘ট্রান্সফার’ করে নিলেন তরুণী! জখম যুবকের মায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদ শহরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পোন্নাবোয়াইনা মল্লিকার্জুন যাদব নামে এক যুবক অস্ট্রেলিয়া থেকে হায়দরাবাদে বাড়ি ফেরেন ২০২৪ সালে। সে বছরের ১৫ নভেম্বর প্রেমিকা এবং ব্যবসায়ের অংশীদার মেধা রেড্ডি এবং পরিচিত কয়েক জনের সঙ্গে ‘পার্টি’ করেন। রাতে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন মল্লিকার্জুন। ফ্লাইওভারে ওই দুর্ঘটনার পর তড়িঘড়ি যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে। সেই থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন মল্লিকার্জুন।
মল্লিকার্জুনের মা এলজি মুকেশ্বরী যাদবের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর তাঁর ছেলের মোবাইলটি পাওয়া যাচ্ছিল না। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। অর্থের জোগাড় করতে গিয়ে তাঁর নজরে আসে যে ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩২ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে ছেলের বান্ধবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এবং সেটাও আবার ছেলে দুর্ঘটনায় মারাত্মক ভাবে জখম হওয়ার পরে। তিনি ছেলের প্রেমিকার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে যান। কিন্তু পুলিশ এফআইআর নেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও হাল ছাড়েননি ওই মহিলা।
কিছু দিন আগে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন মল্লিকার্জুনের মা। ছেলের ফোন হারানো, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানো-সহ পুলিশের অসহযোগিতার কথা জানান পুলিশ কমিশনারকে। তার পরেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। এফআইআর দায়ের করেছে মল্লিকার্জুনের প্রেমিকা এবং তার বাবার বিরুদ্ধে। চুরি, প্রতারণা-সহ একাধিক অপরাধের অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ করছে পুলিশ। পাশাপাশি যে পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তারও তদন্ত করছে পুলিশ।
মল্লিকার্জুনের মা বলেন, ‘‘আমার ছেলের বয়স মাত্র ২৫ বছর। ওর এত বড় দুঃসময়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুই কী ভাবে এটা করতে পারল ভাবতে পারছি না! আর সেটা তার বাবাও মেনে নিলেন? পুলিশের কাছে আমার আবেদন, আপনারা অপরাধীদের শাস্তি দিন।’’