ফটক ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তরুণী। তাঁকে চলে যেতে বলছেন নিরাপত্তারক্ষী। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
অচেনা থেকে চেনা। বন্ধু থেকে প্রেমিক। তার পর টানা তিন বছর এক ছাদের নীচে বাস। অথচ পাশের মানুষটির মনের হদিশ পাননি। পেলেন যখন, তখন বিয়ের মণ্ডপে বসে সে, অন্য কারও সঙ্গে। তা-ও আশা ছাড়েননি। তাই দৌড়ে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, বিধ্বস্ত অবস্থায় তাঁকে দেখে হয়ত মন ফিরে যাবে। কিন্তু সবকিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন যাঁকে, এক বারের জন্য ফিরেও তাকাল না সে। শুনতে আবেগঘন সিনেমার কোনও দৃশ্যের মতো হলেও, বাস্তবে ঠিক এমন দৃশ্যই উঠে এল মধ্যপ্রদেশ থেকে, যা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে।
মধ্যপ্রদেশের হোশঙ্গাবাদের ঘটনা। সেখানকার কোঠী বাজারের কামাখ্যা গার্ডেনে সম্প্রতি একটি বিয়ের আয়োজন হয়েছিল। থোকা থোকা দামি ফুল, রঙিন কাপড়ে ঢেকে গিয়েছিল অনুষ্ঠানস্থল। সানাইয়ের সুর শোনা যাচ্ছিল সকাল থেকেই।
কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন। একে একে অতিথিরা যখন ভিড় করছেন, আচমকাই সেখানে উদভ্রান্ত চেহারার এক তরুণী হাজির হন। ‘বাবু’, ‘বাবু’ বলে কাতর স্বরে কাউকে ডাকতে শুরু করেন তিনি। মূল ফটক টপকে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েক জন লোক তাঁকে ঠেলে বার করে মূল ফটকটি ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন।
তাতেও হাল না ছেড়ে লোহার ফটক ধরে ঝাঁকাতে থাকেন তিনি। কাতর স্বরে বলতে থাকেন, ‘‘এক বার আমার বাবুকে ডেকে দিন। একটি বারের জন্য ডেকে দিন। আমি শুধু এক বার কথা বলতে চাই।’’ হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে বেশ কয়েক বার তাঁকে সরানোর চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু নাছোড়বান্দা তরুণী জানিয়ে দেন, ‘বাবু’র সঙ্গে দেখা না করে একচুলও নড়বেন না তিনি।
ভিতরে জমকালো অনুষ্ঠান চলাকালীন, বাইরে এমন দৃশ্য দেখে থমকে যান পথচলতি মানুষও। তাঁদের ওই তরুণী জানান, যাঁর বিয়েতে এত আয়োজন, তাঁর সঙ্গে চার বছরের সম্পর্ক তাঁর। তিন বছর সহবাসও করেছেন। কিন্তু তাঁকে না জানিয়েই অন্য কারও সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়ছেন তাঁর প্রেমিক।
তরুণীর এই দাবি উড়িয়ে দেন ছেলেটির পরিবারের লোকজন। তাঁকে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় পুলিশে খবর দেন। পুলিশই এসে ওই তরুণীকে সরিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশকে ওই তরুণী জানান, প্রেমিক অন্য কাউকে বিয়ে করছেন, তাতে আপত্তি নেই তাঁর। কিন্তু সেটা তাঁকে জানানো উচিত ছিল। এত দিনের সম্পর্ক সত্ত্বেও কেন তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা হল, তিনি শুধু তার উত্তর চান।
হোশঙ্গাবাদ কোতোয়ালি থানার এসআই শ্রদ্ধা রাজপুত ওই তরুণীর বয়ান শোনেন। তাঁকে আইনি পদক্ষেপ করার পরামর্শও দেন। কিন্তু ওই তরুণী সাফ জানিয়ে দেন, প্রেমিককে থানা-পুলিশের চক্করে ফাঁসাতে চান না তিনি। তার পর নিজে থেকেই বাড়ি ফিরে যান।
তবে ওই তরুণী ভগ্ন হৃদয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, তাঁকে ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছেন নেটপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের মতে কতটা ভালবাসলে তবে মান-সম্মান ভুলে এ ভাবে ছুটে যাওয়া যায়। যদিও কারও কারও মতে, অভিযুক্ত যুবক আসলে কখনও তাঁকে ভালবাসেননি। তাঁর জন্য এ ভাবে কেঁদে বেড়ানো অর্থহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy