ব্যাঙ্ক কর্মীদের বিক্ষোভ। মহারাষ্ট্রে। ছবি: রয়টার্স।
রাজধানী দিল্লি বা মুম্বইয়ের মতো বাণিজ্য শহরে তেমন কোনও দাগ কাটতে পারল না ১০ শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সর্বভারতীয় ধর্মঘট। তবে দেশের তিন রাজ্যে প্রায় সর্বাত্মক বনধের চেহারা দেখা গেল এ দিন। কেরল, ত্রিপুরা এবং কর্নাটক। এ ছাড়াও ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা আর হিমাচল প্রদেশে। সব মিলিয়ে দেশের নানা প্রান্তে প্রায় ১৫ কোটি শ্রমিক, কর্মচারী এ দিনের ধর্মঘটে কাজে অংশ নেননি।
দেশ জুড়েই এ দিন প্রায় স্তব্ধ রইল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পরিষেবা। তবে বেসরকারি ব্যাঙ্ক খোলা থেকেছে বেশিরভাগ রাজ্যেই। হরিয়ানার গুরুগ্রাম (গুরগাঁও) শিল্প তালুকে বেশ প্রভাব পড়েছে ধর্মঘটের। ৯০ শতাংশ শ্রমিক না আসায় কাজ হয়নি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্টে। কোল ইন্ডিয়ার কর্মচারীরাও কাজে যোগ না দেওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে তা নিয়ে বিশেষ উদ্বেগের প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। যা মজুত কয়লা দিয়ে আগামী ৫০-৬০ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন বজায় রাখা যাবে বলে তিনি জানান।
সর্বাত্মক বনধ কেরলে
বামশাসিত এই রাজ্যে বনধের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)-এ পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। ইসরোর ৬০০০ কর্মী এ দিন কাজে যোগ দেননি। ইসরোর ক্ষেত্রে অতীতে বনধে এমন নজির নেই। কোচিতে ট্যাক্সি চালকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সমর্থকদের। কোচির আইটি হাব-এ কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল হাতেগোনা। রাস্তাঘাটে গাড়ি প্রায় চলেনি। দেকানপাট বন্ধ। বন্ধ স্কুল, কলেজও। সব মিলিয়ে কেরল এ দিন স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
ত্রিপুরাও স্তব্ধ
দোকানপাট, ব্যবসা, বাজার, ব্যাঙ্ক, সরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- সবই বন্ধ ত্রিপুরায়। রাস্তাতে কোনও গাড়ি চলতে দেওয়া হয়নি। রেল পরিষেবাও ব্যাহত হয়। কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় ত্রিপুরা-বাংলাদেশের মধ্যেকার বাণিজ্যও ব্যাহত হয়েছে।
কর্নাটক
বেঙ্গালুরুর সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ। বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশি কিছু পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক, বেসরকারি শিল্প এবং পরিবহণ প্রায় বন্ধ। বেশ কিছু ট্যাক্সি চলছে। তবে তা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের থেকে। অর্থাৎ এই রাজ্যেও বন্ধের প্রভাব লক্ষ্যণীয়।
তামিলনাড়ু
ধর্মঘটের বেশ প্রভাব পড়েছে তামিলনাড়ুতে। পরিবহণ পরিষেবা অচল ছিল রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায়। ভেল স্টিল প্ল্যান্ট পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তবে মারাইমালাইনগর এবং শ্রীপেরুম্বুদুরের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক।
উত্তরপ্রদেশ
এ রাজ্যের ১৮ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেও বেশ প্রভাব পড়েছে ধর্মঘটের।
হিমাচল প্রদেশ
রাজ্য জুড়ে ব্যাঙ্ক এবং শিল্পগুলি বন্ধ রয়েছে। বেসরকারি হোটেল, জলপ্রকল্প, সরকারি ইনসিওরেন্স সংস্থা এমনকী বিএসএনএল পরিষেবাতেও এর খারাপ প্রভাব পড়েছে।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা, রেলে বিদেশি লগ্নি-সহ এক ডজন ইস্যুতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। তবে বন্ধ আটকাতে মোদী সরকারের চেষ্টা কিছু কম ছিল না। শেষ বেলায় শ্রমিকদের জন্য একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলেও তাতে মন ভেজেনি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের। এ দিন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ ছাড়া সবকটি বড় শ্রমিক সংগঠনই ধর্মঘটে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন:
ধর্মঘটে সাড়া দিল না এ রাজ্যের শিল্পাঞ্চল
সচল রাজ্য, সজাগ পুলিশ, তবে রাস্তায় লোক কম
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy