শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পান সনিয়া গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
দীর্ঘ আড়াই মাসের চেষ্টাতেও সভাপতি বেছে নিতে পারেনি কংগ্রেস। ঘুরে ফিরে সেই গাঁধী পরিবারের হাতেই উঠেছে দলের রাশ। সনিয়া গাঁধীকে অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি করা হয়েছে। তা নিয়ে এ বার দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলকে বিঁধলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভাপতি হিসাবে রাহুল গাঁধী যে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছেন, নতুন করে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে দলের নেতৃত্ব নিয়ে গাঁধী পরিবারের লোকজন নিজেদের মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর পর, ব্যর্থতার দায়ে কাঁধে নিয়ে গত ২৫মে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গাঁধী। তার পর প্রায় আড়াই মাস কেটে গেলেও সভাপতি নির্বাচন করতে পারেনি কংগ্রেস। এমনকি শনিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেও সমাধান বেরিয়ে আসেনি। যার পর অস্থায়ী ভাবে সনিয়া গাঁধীকেই দলের নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি না মেলা পর্যন্ত, কংগ্রেসের অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি করা হয়েছে তাঁকে।
ওয়ার্কিং কমিটির এই সিদ্ধান্ত নিয়েই নতুন করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের মুখোমুখি হন বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত সেই গাঁধী পরিবারেই আস্থা রাখল কংগ্রেস। তাই বলা যেতে পারে যে, একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করল কংগ্রেস। সনিয়া গাঁধীর হাত থেকে রাহুল গাঁধী, সেখান থেকে আবার সনিয়া গাঁধী, মিউজিক্যাল চেয়ার চলছে বলে মনে হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে একটা পরিবারের জন্যই গান বাজানো হচ্ছে। কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে রাহুল গাঁধী যে একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন, এতে সে কথা আরও এক বার প্রমাণিত হল।’’
আরও পড়ুন: প্রত্যাবর্তন! সনিয়া গাঁধীই ‘আপাতত’ কংগ্রেসের সভাপতি
পরিবারতন্ত্র নিয়েও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন সম্বিত। তাঁর কথায়, কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্য বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। বিজেপির কাছে দলই পরিবার। কিন্তু কংগ্রেসের কাছে একটি পরিবারই দল। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব করা নিয়ে শনিবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমাোচনা করেন রাহুল গাঁধী। উপত্যকা থেকে অশান্তির খবর আসছে, এমনকি মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে, তা নিয়ে সরকারকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে বলেও দাবি তোলেন। এ দিন সম্বত তারই প্রতিক্রিয়ায় সম্বিত বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে রাহুল গাঁধীর মন্তব্য ভয়ঙ্কর এবং অবমাননাকর। খামেকা হিংসায় উস্কানি দিচ্ছেন কেন শাহজাদা রাহুল? দেশের শান্তি সহ্য করতে পারেন না উনি। কাশ্মীরে শান্তি বিরাজ করছে। কংগ্রেসেরও শান্ত থাকা উচিত।’’
আরও পড়ুন: ৩৭০ রদ হওয়ায় শেষ হবে সন্ত্রাসবাদ, উন্নয়ন হবে কাশ্মীরে, বার্তা অমিত শাহের
তবে শুধু সম্বিত পাত্রই নন, সনিয়াকে সভাপতি পদে বসানোয় কংগ্রেসকে বিঁধেছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহানও। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘কখনও শিক্ষা হবে না কংগ্রেসের। আশ্চর্যের বিষয় হল, সভাপতি হিসাবে এখনও রাহুল এবং সনিয়াকেই চাইছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি।’’ রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের দিন শেষ বলেও কংগ্রেসকে সতর্ক করেন তিনি। উত্তরপ্রদেশে মুলায়ম সিংহ যাদব এবং বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘পরিবার এবং জাতপাত ভিত্তিক রাজনীতিকে সর্বত্র ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন মানুষ। উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলই তার প্রমাণ। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও তোষণের রাজীনতিকে গ্রহণ করেননি মানুষ। জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকেই বেছে নিয়েছেন সকলে।’’ এমন অবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কংগ্রেসকে নেতা নির্বাচন করার পরামর্শ দেন শিবরাজ। তা না করতে পারলে, তাদের কেউ বাঁচাতে পারবে না বলেও সতর্ক করে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy