—ফাইল চিত্র।
রামমন্দিরের বিরোধিতা করেছিলেন। তাই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কন্যাকে নোটিস ধরিয়ে বলা হল, এলাকা ছেড়ে চলে যান! কংগ্রেসের মনমোহন সিংহ সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনিশঙ্কর আইয়ারের কন্যা সুরন্যা আইয়ারকে সম্প্রতি এই নোটিস দিয়েছে দিল্লির জঙ্গপুরার রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (আরডব্লিউএ)। তাঁকে নোটিসে বলা হয়েছে ওই এলাকায় থেকে তিনি হিংসার বাতাবরণ তৈরি করছেন। যা কাম্য নয়।
গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের প্রতিবাদে তিন দিনের অনশন করেছিলেন সুরন্যা। সমাজমাধ্যমেই সেই অনশনের কথা জানিয়েওছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘‘২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের আগে দিল্লির আবহাওয়া যা এমনিতেই যথেষ্ট দূষিত (আক্ষরিক অর্থে), এখন আধ্যাত্মিকতার ভারে বিষাক্তও হয়ে পড়েছে। এতটাই যে এই দিল্লিতে শ্বাস নেওয়া দুষ্কর। কিছু কিছু মানুষের উগ্র হিন্দুত্ব, বিদ্বেষ, তর্জন-গর্জন দেখে একজন হিন্দু হিসাবে এবং একজন ভারতীয় হিসাবে আমার লজ্জা হচ্ছে। তাই ঠিক করেছি এর প্রতিবাদে অনশন করব। আগামী শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই অনশন চলবে। আমি এই অনশন করছি আমার মুসলিম ভাইবোনেদের প্রতি ভালবাসা এবং তাঁদের প্রতি সমানুভূতি থেকে। আমি তাঁদের বলতে চাই, জাতীয়তাবোধ এবং হিন্দুত্বের নামে অযোধ্যায় যা হচ্ছে, আমি তার নিন্দা করি।’’
এর কয়েকদিন পরেই সুরন্যার হাতে আসে দিল্লির জংপুরা এলাকার আরডব্লিউএ-র নোটিস। সেই নোটিসে বলা হয়েছে, ‘‘যদি এখনও ভেবে থাকেন যে আপনি রামমন্দিরের উদ্বোধনের প্রতিবাদে যা করেছেন, তা ঠিক, তবে আমাদের পরামর্শ, আপনি দয়া করে এই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। যেখানে আপনার কার্যকলাপকে সুনজরে দেখা হবে বা আদৌ দেখা হবে না। আপনার উস্কানিমূলক কার্যকলাপকে আরডব্লিউএ নজরের আড়ালে রাখতে পারবে।’’
ওই নোটিসের জবাবে একটি ফেসবুক পোস্টে সুরন্যা লেখেন, ‘‘যে আবাসিক কল্যাণ সমিতি থেকে আমাকে ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে সেখানে আমি আদৌ থাকি না। তা ছাড়া আমি ঠিক করেছি, আমি এ বিষয়ে কোথাও কিছু বলব না। আপনারা (সমাজমাধ্যমের বন্ধু এবং অনুগামীরা) আমাকে চেনেন, আমি পড়াশোনা করেছি, কাজ করেছি, সক্রিয় ভাবে সমাজের কাজও করেছি। কোনও একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করিনি। রং নির্বিশেষে সমস্ত দলের সঙ্গে গত কয়েক দশক ধরে কাজ করে চলেছি। তাই আমি কী করেছি তা আপনাদের কাছেই জানানো রইল।’’
সুরন্যার এই বক্তব্য অবশ্য আরডব্লিউএ-কে থামানো যায়নি। তারা পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানায়, প্রাক্তন মন্ত্রীর কন্যা যা বলছেন, তা শিক্ষিত মানুষের কথা নয়। দেশে বাক স্বাধীনতা আছে ঠিকই, তবে যে যা খুশি বলতে পারেন না। উস্কানিমূলক বা হিংসা ছড়ায় এমন কথাবার্তায় সব সময়ই লাগাম টানতে হবে। দিল্লির এই এলাকায় পাকিস্তান থেকে উৎখাত হওয়া মানুষের বাস। তবে তাঁরা সকলেই শান্তিতে থাকেন। সেই শান্তিপ্রিয় লোকালয়ে সুরন্যা রামমন্দিরের বিরুদ্ধে তিন দিন অনশন করে শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছেন।’’ এ ব্যাপারে আরডব্লিউএ-র তরফে প্রাক্তন মন্ত্রী মণিশঙ্করকেও একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে, তিনি যেন তাঁর কন্যাকে সুনাগরিক হওয়ার নিয়ম মেনে চলতে বলেন এবং প্রকাশ্যে কন্যার কার্যকলাপের নিন্দা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy