—ফাইল চিত্র।
কৃষি বিল নিয়ে হই হট্টগোলের মধ্যেই দেশে শ্রমিকদের বন্ধ ও ধর্মঘট ডাকার অধিকার খর্ব হতে বসেছে। ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে আর ধর্মঘটে নামতে পারবেন না তাঁরা, বরং চাইলেই তাঁদের বসিয়ে দিতে পারে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থা। শনিবার লোকসভায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন কোড বিল ২০২০-তে সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে ৩০০ বা তার অধিক কর্মী রয়েছে এমন সংস্থাগুলি সরকারি অনুমতি ছাড়াই যাতে যেমন খুশি কর্মী নিয়োগ এবং ছাঁটাই করতে পারে, তার সপক্ষে সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ওই বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়ে গেলে এ বার থেকে যখন যেমন ইচ্ছে কর্মী নিয়োগ ও ছাঁটাই করতে পারবে সংস্থাগুলি। তার জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে না তাদের।
১০০-র কম কর্মী রয়েছে এমন সংস্থাগুলিই এত দিন এই সুবিধা পেত। দীর্ঘ দিন ধরেই তাতে বদল আনার চেষ্টা করছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে টানাপড়েন চলছিল। সেই অবস্থাতেই গতকাল লোকসভায় বিলটি উত্থাপন করেন শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে সেখানে বিলটিতে এই সংশোধনী প্রস্তাব দেন তিনি।
২০১৯ সালে প্রথম এই বিলটি লোকসভায় উত্থাপন করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবগুলি বিচার বিবেচনা করে দেখতে তা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির শ্রম পাঠানো হয়। সেইসময় বিলটির খসড়ায় উল্লিখিত প্রস্তাব নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বিরোধ বাধে কেন্দ্রের। যে কারণে ৩০০-র বেশি কর্মী বিশিষ্ট সংস্থাগুলির হাতে এই ক্ষমতা তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিলের অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি।
আরও পড়ুন: তুমুল অশান্তির মধ্যেই রাজ্যসভায় পাশ জোড়া কৃষি বিল
তার পর এ বছরের গোড়ায় ৩০০-র কম সংখ্যক কর্মী বিশিষ্ট সংস্থাগুলিকে খরচ কমানোর জন্য সরকারি অনুমতি ছাড়াই কর্মী ছাঁটাই বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার অনুমতি দেয় সংসদীয় কমিটি। তাদের একটি রিপোর্টে বলা হয়, রাজস্থানের মতো রাজ্যে কর্মী সংখ্যার সীমা বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এর ফলে কর্মসংস্থান বেড়েছে এবং ছাঁটাইয়েও রাশ টানা গিয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে দ্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন কোড ২০২০-তে ৭৭ (১)ধারা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার, যার আওতায় যে সমস্ত শিল্প সংস্থার কর্মীসংখ্যা ৩০০ বা তার বেশি, যেখানে বিশেষ একটি মরসুম বা মাঝে মধ্যে কাজ হয় না, বরং সারা বছরই কাজ চালু থাকে এবং যেখানকার কর্মীরা পূর্ববর্তী ১২ মাস গড় কার্যদিবস মেনে কাজ করেছেন, সেই সমস্ত সংস্থার ক্ষেত্রেও কর্মী ছাঁটাই, খরচ কমানোর জন্য কর্মীর সংখ্যা কমানো এবং প্রয়োজনে সংস্থা বন্ধ করার বিষয়টি কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপের ধাক্কা বৈঠকে, উত্তরবঙ্গ সফর এক সপ্তাহ পিছিয়ে দিলেন মমতা
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছ থেকে বিলটি নিয়েই গতকাল সেটি সংসদে পেশ করেন সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। ২৩৩টির মধ্যে তাঁদের ১৭৪টি প্রস্তাবই ওই কমিটি মেনে নিয়েছে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে গতকাল লোকসভায় দ্য কোড অন সোশ্যাল সিকিয়োরিটি ২০২০ এবং দ্য অকুপেশনাল সেফটি, হেল্থ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড ২০২০, এই দু’টি বিল পেশ করেন শ্রমমন্ত্রী, যার তীব্র বিরোধিতা করেন কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি এবং শশী তারুর। তারুর দাবি করেন, এই ধরনের বিল আনার আগে তা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করা উচিত সরকারের। এতে শ্রমিকদের স্বার্থ ধাক্কা খাবে। তাঁদের ধর্মঘট করার অধিকারের উপরে কোপ পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy