(বাঁ দিক থেকে) নিহত রাজেশ কুমার, তাঁর কন্যা কবিতা এবং রাজেশের স্ত্রী কোমল। অভিযুক্ত তরুণ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বাবা-মা এবং দিদিকে কেন খুন করেছিলেন দিল্লির নেব সরায়ের তরুণ অর্জুন? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে দিল্লি পুলিশ। তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। বাবার উপর রাগ থেকেই কি গোটা পরিবারকে নৃশংস ভাবে খুন করলেন তিনি? জোরালো হচ্ছে সেই তথ্যই। পুলিশের এক সূত্রের দাবি, প্রেমিকা অর্জুনকে বিয়ের করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু রাজি ছিলেন না তাঁর বাবা। ‘বেকার’ বলে বার বার খোঁচা দিতেন তাঁকে। সেই রাগেই খুনের ছক কষেছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছরের পড়ুয়া!
তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, খুনের সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় এক বাজারে অর্জুনকে প্রেমিকার সঙ্গে ঘুরতে দেখেছিলেন তাঁর বাবা রাজেশ। তখনই অর্জুনদের পথ আটকান তিনি। জানতে চেয়েছিলেন সঙ্গিনীর পরিচয়। অর্জুন তাঁর বাবাকে জানিয়েছিলেন, সঙ্গে থাকা তরুণীটি তাঁর প্রেমিকা এবং তিনি অর্জুনকে বিয়ে করার জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছেন। তা শুনে রেগে যান রাজেশ। ভরা বাজারে প্রেমিকার সামনেই সপাটে অর্জুনের গালে চড় কষান তিনি। রাজেশ তাঁর ছেলেকে জানান, পরিবারে এখনও তিনিই একমাত্র রোজগার করেন। বেকার হয়ে কী ভাবে বিয়ে করার কথা ভাবতে পারেন অর্জুন? যদিও তখন পাল্টা বাবাকে কিছু বলেননি।
জনসমক্ষে বার বার বাবার তিরস্কারের শিকার হতেন, পুলিশের জেরায় এমনই জানিয়েছেন অর্জুন। তাঁর দাবি, দিন কয়েক আগে স্থানীয় এক নির্মীয়মাণ বহুতলের সামনে দাঁড়িয়ে অর্জুনকে খুবই বকাঝকা করেন রাজেশ। তখন ওই নির্মীয়মাণ বহুতলে কাজ করছিলেন কয়েক জন শ্রমিক। তাঁদের সামনেই তিরস্কৃত হতে হয় অর্জুনকে, যা তাঁর আত্মসম্মানে লাগে।
বাবার সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতার কারণেই খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন অর্জুন, এমনই দাবি পুলিশের। অভিযোগ, পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের জন্য অর্জুনকে তিরস্কার করতেন বাবা। শুধু তা-ই নয়, মা এবং দিদির সঙ্গে বনিবনা ছিল না তাঁর। নানা কারণে বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। সম্প্রতি সম্পত্তির ভাগ নিয়েও পুত্রের সঙ্গে একপ্রস্ত বচসা হয় রাজেশ এবং তাঁর স্ত্রী কোমলের।
বুধবার সকালে দক্ষিণ দিল্লির নেব সরায়ের একটি ঘর থেকে বাবা, মা এবং কন্যার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই নিহত দম্পতির পুত্র অর্জুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও অর্জুন প্রথমে দাবি করেছিলেন, বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখেন, ঘরের দরজা হাট করে খোলা। ঘরের ভিতরে তাকাতেই শিউরে ওঠেন তিনি। দেখেন, বাবা, মা এবং দিদি রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেয় পড়ে রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন তিনি। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। প্রথমে অর্জুনের উপর সন্দেহ হয়নি তদন্তকারীদের। কিন্তু পরে তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার করা হয় অর্জুনকে। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy