কৃষকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এক মেরুতে প্রায় দু’ডজন রাজনৈতিক দল। ছবি: পিটিআই।
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন প্রায় দু’ডজন রাজনৈতিক দলকে এক মেরুতে নিয়ে এসেছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরিসর তৈরির চেষ্টাও শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আড়াই বছর আগের মতো এ বারও তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি দলগুলিকে এক মঞ্চে নিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করেছেন। রাও ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির আপ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, কেরলের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সম্মেলন ডাকার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছেন রাও। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গেও রাও কথা বলেছেন বলে সূত্রের খবর। রাওয়ের মতে, কংগ্রেস জাতীয় দল হিসেবে তাঁর বিরোধী ভূমিকা ঠিকমতো পালন করছে না। তাই আঞ্চলিক দলগুলিকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
আগামিকাল কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ভারত বন্ধকে অন্তত ২৪টি রাজনৈতিক দল সমর্থন জানিয়েছে। বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে বিরোধী নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল দরবার করতে যাবেন। ওই প্রতিনিধি দলে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার থাকবেন। বাকিরা কে কে থাকবেন, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কারণ, কোভিডের বিধিনিষেধের জন্য পাঁচ জনের বেশি নেতা যেতে পারবেন না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিবাল আজ সিংঘুতে গিয়ে কৃষকদের সমর্থন জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ কৃষি আইনকে ‘অম্বানী-আদানি আইন’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন। সংসদের অধিবেশন ডেকে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেন পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদেরা।
আরও পড়ুন: ধর্নায় অখিলেশ আটক, কৃষকের পাশে মায়াবতী
আরও পড়ুন: ‘এই দ্বিচারিতা লজ্জার’, কৃষকদের বন্ধ সমর্থন করায় বিরোধীদের তোপ কেন্দ্রের
বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ নেতার মতে, এ কথা ঠিক, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে বিরোধীদের ছত্রভঙ্গ দশা এখনও কাটেনি। কিন্তু উল্টো দিকে শিবসেনা, অকালি দলের মতো বিজেপির পুরনো শরিক এখন এনডিএ ত্যাগ করেছে। নতুন শরিকদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি কৃষি বিলের বিরুদ্ধে। হরিয়ানার বিজেপির জোট শরিক দুষ্যন্ত চৌটালার জেজেপি-র উপরেও প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে।
আজ জেজেপি-র চার বিধায়ক কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। হরিয়ানায় ৯০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি নিজেদের ৪০ জন বিধায়ক নিয়ে ১০ বিধায়কের জেজেপি-র সঙ্গে জোট গড়েছিল। চার নির্দলও সরকারকে সমর্থন করছিলেন। এ বার চার জেজেপি বিধায়ক উল্টো সুর গাওয়ায় খট্টর সরকারের অন্দরে বিপদঘন্টি বেজে গিয়েছে।
বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, বিরোধী নেতারা স্রেফ নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণে কৃষি বিলের বিরোধিতা করছেন। আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করাচ্ছেন, কেসিআর ২০১৮-র মার্চেও ফেডেরাল ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা দানা বাঁধেনি। বরং রাও আদতে বিজেপির পক্ষেই কাজ করছেন কি না, সে সংশয়ও দানা বেঁধেছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেও বিরোধী জোট গঠনের কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচিই তৈরি করতে পারেননি। কৃষকদের আন্দোলনে সমাধানসূত্র মিললে, বিরোধী জোটের বেলুনও ফের চুপসে যাবে কি না, তা নিয়ে এখন রাজনীতিকদের মধ্যে জল্পনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy