কৃষকদের আন্দোলনের মাঝেই দুই কিষান নেতাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মাঝেই কি কৃষকদের আন্দোলনে ফাটলের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে? দুই কৃষক ইউনিয়নের নেতার একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর এ প্রশ্নই জোরালো হচ্ছে। যদিও নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য হলেও ‘ফাটল’ মেরামতের চেষ্টা শুরু করেছেন তাঁরা। তবে গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন কৃষক আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা সংযুক্ত কিষান মোর্চা (এসকেএম)-র শীর্ষ নেতারা।
স্থানীয় একটি দৈনিকে একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ওই প্রতিবেদনের দাবি, হরিয়ানার কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতা গুরনাম সিংহ চারুনি রাজ্যের সরকার ফেলে দিতে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের সংগঠন সর্ব হিন্দ রাষ্ট্রীয় কিষান মহাসংঘের নেতা শিবকুমার কাক্কাজি। এ কাজের জন্য হরিয়ানায় রাজনৈতিক দলের টিকিটও তিনি পাবেন বলেও দাবি করেন শিবকুমার। শিবকুমার ওই দৈনিকের অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন চারুনি। এমনকি, শিবকুমারকে ‘আরএসএসের এজেন্ট’ বলে বসেন। দুই কিষান নেতাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হতেই অস্বস্তিতে পড়ে এসকেএম। বিভিন্ন কৃষক ইউনিয়নগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কার্যত নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা।
দুই নেতার মাঝে এ ধরনের বাক্যবিনিময় ছাড়াও কস্টিটিউশন ক্লাবে কংগ্রেস এবং আপ নেতাদের সঙ্গে চারুনির বৈঠকে নিয়েও অস্বস্তিতে পড়েছে এসকেএম। চারুনি যে ওই দলগুলির সঙ্গে দেখা করেছেন, তা নিয়ে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে সচেষ্ট হয় এসকেএম। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানায় তারা। গোটা বিষয়ে আন্দোলনের ভাবমূর্তি যাতে কালিমালিপ্ত না হয়, সে জন্যও উদ্যোগী হয়েছে এসকেএম। বিবৃতিতে এসকেএম বলেছে, ‘যে কোনও সংগঠন বা রাজনৈতিক দল আমাদের সমর্থন করতে পারেন। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সরাসরি যোগযোগ করবে না এসকেএম’।
নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে উদ্যোগী হয়েছেন শিবকুমারও। একটি ভিডিয়োবার্তায় তিনি বলেন, “একটি দৈনিকে বলা হয়েছে যে আমি নাকি বলেছি, গুরনাম সিংহ চারুনিজি ১০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। আমি এ ধরনের কোনও মন্তব্যই করিনি। চারুনিজি আমার বন্ধু।”
গোটা ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে চারুনিও বলেছেন, “সকলেরই নিজের মতামত ব্যক্ত করার অধিকার রয়েছে। কেন্দ্রের কালা কানুনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনের আমি প্রতি পুরোপুরি নিবেদিতপ্রাণ। তবে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আমার সাম্প্রতিক বৈঠককে কিছু ব্যক্তি মোর্চার বিপক্ষে গিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এ-ও বলা হয়েছে, যেন আমি তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আসলে সামাজিক কাজের জন্য ১০-১২ জনের একটি তালিকায় আমারও নাম যোগ করা হয়েছিল। এই কমিটির কাজ ছিল, কেন্দ্রের ৩ কৃষি আইন নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরা। সেই সঙ্গে এই আইন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে একটি আলাদা মঞ্চ তৈরি করা, যাতে তা প্রত্যাহারের চাপ তৈরি করা যায়।”
চারুনির মতে, বিরোধী রাজনীতিকদের একমঞ্চে আনা হলে তা সরকারের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতে তথা কৃষকদের আন্দোলনেই সহায়ক হবে। তবে তিনি এ-ও বলেছেন যে মোর্চা এমন ভাবনায় সহমত না-ও হতে পারে। চারুনির কথায়, “কোনও রাজনৈতিক দলের থেকে আমি ঘুষ নিয়েছি, এমনটা বললেই হবে না। তার প্রমাণও করতে হবে।” পাশাপাশি, কৃষকদের আন্দোলনে যে ভাঙন ধরতে দেবেন না, এমন দাবিও করেছেন চারুনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy