একটি কৃষক সংগঠন আন্দোলন প্রত্যাহার করার পরে। বুধবার রাতে নয়ডার চিল্লা সীমানায়। ছবি: পিটিআই।
যুদ্ধের পর যে ভাবে শান্ত অথচ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে থাকে জনপদ, রাজধানীর আজ সেই হাল। রাস্তায় স্বাভাবিকের তুলনায় লোক এবং যান চলাচল অনেকটা কম। খাঁ খাঁ করেছে মূল সংঘর্ষবিন্দু আইটিও মোড়। যার কাছেই রাখা রয়েছে গত কাল ট্র্যাক্টরের ধাক্কায় বেহাল দু’টি সরকারি সবুজ বাস। অনেক বেলা পর্যন্ত আইটিও থেকে বিভিন্ন দিকে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ ছিল। লালকেল্লা চত্বরে অনেক বেলা পর্যন্ত উল্টে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে গত কাল চুরমার হওয়া পুলিশের জিপ।
লালকেল্লায় গত কালের ঘটনার পর সেখানকার ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে পৌঁছান কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ পটেল। কাল থেকেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দিল্লির এই অন্যতম পর্যটনস্থলটি। পটেল তাঁর মন্ত্রকের কর্তাদের নির্দেশ দেন, অবিলম্বে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে, যা পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সূত্রের খবর, ভিতরে ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কাঁচের ছোটবড় টুকরো, কাগজের মণ্ড, কাঠের টুকরো। দেখা যায় টিকিট কাউন্টার এবং মেটাল ডিটেক্টর-এর প্রবেশদ্বার ভাঙচুর হয়েছে। পরে পটেল টুইট করে বলেন, “সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্তাদের নিয়ে লালকেল্লা পরিদর্শন করলাম আজ। দু’টি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট তৈরি করা এবং সেখানে তাণ্ডবের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা।” জানিয়েছেন, লালকেল্লা থেকে ফেরার পথে গাঁধী স্মৃতি এবং দর্শন স্মৃতিও পরিদর্শন করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ওড়িশার কালাহান্ডি থেকে ৮৫ জন শিশু প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে এসেছিল। ফেরার সময় তারা লালকেল্লা দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু পৌঁছতে পারেনি। আজ তাই তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রহ্লাদ। তারা নিরাপদেই রয়েছে।
কাল আন্দোলনকারী এবং পুলিশের সংঘর্ষে যে ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন সেই নবরীত সিংহ সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে বিলাসপুরে তাঁর গ্রামে ফিরেছিলেন। গ্রামে তাঁর বিয়ে উদ্যাপনের কথা ছিল সদ্যবিবাহিত ২৭ বছরের নবরীতের। ট্র্যাক্টর থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যুর পর শোক নামে তাঁর গ্রামে। ঘটনাচক্রে তিনিই ট্র্যাক্টরটি চালাচ্ছিলেন। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গিয়ে তা উল্টে যায়। নীচে পড়ে পিষে যায় তাঁর দেহ।
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র গাজিপুর নয়, সিঙ্ঘু সীমানা থেকেও এক দল আন্দোলকারী এসে গত কাল তছনছ করেছেন লালকেল্লা চত্বর। তাঁদের কারও হাতে ছিল উদ্যত কৃপাণ, কেউ কেউ ঘোড়ায় চড়েও! পুলিশকে এড়িয়ে দুপুরে দলে দলে আন্দোলনকারীরা ঢুকে পড়েছিলেন লালকেল্লায় চত্বরে। গম্বুজের মাথায় একটি পাইপ বেয়ে উঠে শিখদের একটি ধর্মীয় পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। লালকেল্লার উপরে পতপত করে উড়তে থাকে তা! গম্বুজের উপরেও উঠে পড়েন অনেকে। কৃষকদের পতাকাও উড়তে দেখা যায় লালকেল্লায়।
প্রথমে কিছুক্ষণ দৃশ্যতই হতভম্ব ছিল পুলিশ-প্রশাসন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। কৃষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও চলতে থাকে। ভিতরে লাঠিও চলে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। বাইরে থেকে শুধু দেখা যায়, একাধিক কৃষক বোঝাই অ্যাম্বুল্যান্স বেরিয়ে আসছে লালকেল্লা থেকে। গোটা ঘটনার অভিঘাতে আজও কিছুটা স্তম্ভিত রাজধানী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy