ছবি: সংগৃহীত।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের একাংশের তুমুল বিক্ষোভের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে ফের মুখ খুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কৃষিতে সংস্কার জরুরি ঠিকই, কিন্তু সরকারকেও শুধু মাত্র ধান বাদে অন্য ফসলের জন্যও আকর্ষণীয় এবং স্বচ্ছ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
মোদী সরকারের নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে রাজধানী দিল্লির প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তর ভারতের একটা বড় অংশের কৃষক। তাঁদের সঙ্গেই বিক্ষোভ অংশ নিচ্ছেন অন্যান্য বহু রাজ্যের কৃষকেরা। ইতিমধ্যেই একাধিক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে প্রবল ঠান্ডায়। কয়েক জন বিক্ষোভকারী কৃষক আত্মহত্যাও করেছেন। কৃষকদের অভিযোগ, মোদী সরকারের নয়া তিন কৃষি আইনের ফলে বিপুল ফায়দা তুলবে কর্পোরেট সংস্থাগুলি। কৃষক নেতাদের অভিযোগ, মোদী তথা বিজেপির ঘনিষ্ঠ বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সুবিধা করে দিতেই ওই নয়া তিন আইন চালু করা হয়েছে। নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের পাশাপাশি বিদেশেরও বহু বিশিষ্ট জন। এই অবস্থায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের ব্যাখ্যা, কৃষি সংস্কারের ফলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল বিক্রি কম লাভজনক হবে। এর ফলে কেউ কেউ যেমন লাভবান হবেন, তেমনই অনেকে ক্ষতির মুখে পড়বেন। সেটা মাথায় রেখে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। পাশাপাশি তিনি বলেন, ধানের বিপুল উৎপাদন করতে গিয়ে পঞ্জাবে ভূগর্ভস্থ জলে টান পড়ছে। একটি হিসেব বলছে, এ ভাবে চললে আগামী ২০ বছরের মধ্যে সেখানে জলের ভাণ্ডার ফুরিয়ে যাবে। এই অবস্থায় অন্য ফসলের জন্যও আকর্ষণীয় ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পেলে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে বলে মনে করেন অভিজিৎ।
এর আগে দফায় দফায় কৃষকদের সঙ্গে মোদী সরকারের মন্ত্রীরা কথা বললেও তাতে লাভ হয়নি। কৃষকেরা তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড়। তার মধ্যেই খোদ প্রধানমন্ত্রী বারবার তাঁর সরকারের তিন কৃষি আইনকে সমর্থন জানিয়ে নানা সময় বক্তব্য রাখায় ক্ষুব্ধ কৃষক নেতারা। বিজেপির অনেকে কৃষকদের এই বিক্ষোভকে দেশবিরোধী চক্রান্ত এবং এর পিছনে খলিস্তানি-মাওবাদীদের মদত রয়েছে রলায় সেই ক্ষোভ বেড়েছে। আগামী ৪ জানুয়ারি ফের সরকারপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারী কৃষকদের। তাঁরা ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, যদি কোনও সামাধানসূত্র না বেরোয়, বা সরকারের সঙ্গে বৈঠক যদি ব্যর্থ হয় তা হলে প্রজাতন্ত্র দিবসে তেরঙ্গা নিয়ে দিল্লি রাস্তায় মহামিছিল করবেন কৃষকেরা। ফলে সব মিলিয়ে চাপ বাড়ছে মোদী সরকারের উপর। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে দিকেই নজর সব পক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy