কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে সিংঘু সীমানায় শিখ কিশোর। ছবি— রয়টার্স।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করার অনেক আগে থেকেই দিল্লি সীমানায় কৃষক আন্দোলনে বর্ষপূর্তির বিক্ষোভ কর্মসূচি তৈরি ছিল। শুক্রবার সেই পূর্ব পরিকল্পনা মাফিকই দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় হল বিক্ষোভ। মূলত হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের বিপুল সংখ্যক কৃষকের ভিড় সকাল থেকেই দিল্লির সিংঘু, টিকরি এবং গাজিপুর সীমানায়। দুপুরে সংযুক্ত কিসান মোর্চার আহ্বানে শুক্রবার দিল্লি সীমান্তে উপস্থিত হন ৪০টি কৃষক সংগঠনের সদস্যরা। একটি বিবৃতিতে সংযুক্ত কিসান মোর্চা বলেছে, ‘ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সংযুক্ত কিসান মোর্চার আহ্বানে হাজার হাজার কৃষক জড়ো হয়েছেন। এমনকি যে সব রাজ্য দিল্লি থেকে দূরে অবস্থিত, সেখানেও জমায়েত, ধর্না-মিছিল-সহ নানা কর্মসূচিতে শামিল হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট শিবিরের বক্তব্য, আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচির সাফল্যে স্পষ্ট— প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক ঘোষণা সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা নিজেদের অবস্থান থেকে আপাতত নড়ছেন না। কৃষকদের দাবি, প্রথমত সংসদের দু’টি কক্ষে তিনটি আইন রদ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল-সহ কৃষকদের অন্যান্য দাবিগুলির সুরাহা করতে হবে। মনে করা হচ্ছে, আন্দোলনে প্রাথমিক সাফল্যের পরে বিষয়টিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন কৃষক নেতারা। আসন্ন উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাব নির্বাচনে বিজেপিকে জবাব দেওয়ার একটা মানসিকতাও কাজ করছে বলে অনেকের ধারণা। আজ দিল্লির সীমানা থেকে বিভিন্ন বার্তা বারবার উঠে আসছে। যার নির্যাস, ‘৭০০ প্রাণ চলে গেলেও সরকার ফিরে তাকায়নি। উল্টে কৃষকদের খলিস্তানি, জঙ্গি, আন্দোলনজীবী বলেছে। কিন্তু নির্বাচন কাছে আসার পরে নিজেদের বেহাল সমীক্ষা দেখে তাদের টনক নড়ছে। কেন্দ্রের শাসক দল নিছকই ভোটের রাজনীতি করছে।’
উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা আজ টুইট করে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘কৃষক আন্দোলনের এক বছর পূর্তি হল। ৭০০ জন কৃষকের শহিদ হওয়ার ঘটনা এবং কৃষক সত্যাগ্রহের ঘটনা অন্নদাতাদের উপর অহংকারী সরকারের অত্যাচার হিসেবে কেউ ভুলতে পারবেন না। কিন্তু ভারতে কৃষকদের জয়জয়াকার বরাবরই, ভবিষ্যতেও থাকবে।’ কৃষক সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিগত ১২ মাস ধরে যে আন্দোলন চলছে, দেশের গণ্ডিতেই তা সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন। কোটি কোটি মানুষ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, যা প্রতিটি রাজ্যে, প্রতিটি জেলায় এবং প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিল সোমবার অধিবেশনের প্রথম দিনেই পেশ হওয়ার কথা। আলোচনা ছাড়া আগের আইন তিনটি পাশ হলেও, এ বার বিলটিতে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠক এ দিন পর্যাপ্ত উপস্থিতির অভাবে বাতিল হয়েছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে কী কী করা যেতে পারে, তা-ই ছিল আলোচ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy