শুভকরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
মাকে ছোটবেলাতেই হারিয়েছিলেন ২১ বছরের কৃষক শুভকরণ সিংহ। বয়স্ক বাবা এখন মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাই জমিজিরেতে চাষবাষের পুরোটা দেখাশোনা করতেন একাই। সে সব সামলেই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গিয়েছিলেন হরিয়ানা কৃষক আন্দোলনে যোগ গিতে। বুধবার সেখানেই কৃষক-পুলিশ সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শুভকরণের পড়শিরা বলছেন, এতে গোটা পরিবারটি একরকম জলেই পড়ল।
পরিবার বলতে দুই বোন আর অসুস্থ বাবা। ঋণ নিয়ে এক বোনের বিয়ে দিয়েছেন। ছোট বোনকে পড়াশোনাও করাচ্ছিলেন শুভকরণই। দুই একরের বেশি জমি আছে তাদের পরিবারের নামে। যদিও প্রতিবেশীরা বলছেন, শুভকরণেরা ‘গরিব’। ধারদেনা, বাবার অসুখ, বোনের পড়াশোনার খরচ সামলে যে ভাবে সংসার টানতেন শুভকরণ, তাকে স্বচ্ছল বলা চলে না।
ফলে শুভকরণের বাবার চিকিৎসা, বোনের পড়াশোনা, কৃষিকাজ এবং তাঁর নেওয়া ঋণের ভবিষ্যৎ কী, তার দায়িত্ব কে নেবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারী কৃষকেরা। শুভকরণের পরিবারের এক জনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি এবং এককালীন অর্থসাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা সরকারের কাছে। পুরোটাই শুভকরণের মৃত্যুর ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসাবে দাবি করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে আন্দোলনকারী কৃষকেরা জানিয়েছেন, যত দিন না এই ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাচ্ছে, তত দিন শুভকরণের ময়নাতদন্ত করতে দেবেন না তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কৃষি উৎপাদনের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, কৃষকদের পেনশন এবং শস্যের বিমা-সহ নানা দাবিদাওয়া পূরণের জন্য পথে নেমেছেন পঞ্জাবের কৃষকেরা। সেই আন্দোলনেই যোগ দিতে গিয়েছিলেন শুভকরণ। কৃষকদের অভিযোগ, পুলিশের ছোড়া গুলির আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শুভকরণের মাথায় আঘাতের চিহ্নও ছিল বলে সূত্রের খবর। যদিও ঠিক কী কারণে শুভকরণের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের পরই এ বিষয়ে জানা যাবে। কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষকেরা সেই ময়নাতদন্তই করতে বাধা দিচ্ছেন।
তাঁরা পঞ্জাব সরকারের কাছে দাবি করেছেন, শুভকরণকে শহিদ বলে ঘোষণা করতে হবে এবং তাঁর ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের বিশেষ চিকিৎসক দলও তৈরি করতে হবে পঞ্জাবকে। যদিও কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারই এখনও কৃষকদের এই দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy