সংসদ চত্বর থেকে নীলমকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: পিটিআই ।
বেকারত্বের জ্বালায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন সংসদের ভিতরে রংবোমা নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় ধৃত নীলম আজাদ। তেমনটাই দাবি তাঁর পরিবারের সদস্যদের। নীলমের পরিবারের দাবি, নীলম উচ্চশিক্ষিত। কিন্তু অনেক দিন ধরে চেষ্টা করেও তিনি কোনও চাকরি জোটাতে পারেননি। আর সেই কারণে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি, মরে যাওয়ার কথাও বলতেন। নীলমের দাদা জানিয়েছেন, দেশের বেকারত্ব নিয়ে প্রায়ই সরব হয়ে উঠতেন নীলম। এমনকি, তিনি কৃষক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন নীলমের দাদা রামনিবাস।
বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ বিজেপির মাইসুরু কেন্দ্রের সাংসদ প্রতাপ সিংহের দেওয়া প্রবেশপত্র নিয়ে, জুতোয় রংবোমা লুকিয়ে সংসদ ভবনে ঢুকে পড়েন সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি নামে দুই যুবক। অধিবেশন চলাকালীন দুপুর ১টার কিছু পরে লোকসভায় জ়িরো আওয়ারের সময় দর্শক আসন থেকে নীচে ঝাঁপ মেরে ছুড়তে থাকেন সেই রংবোমা। ঘন হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় লোকসভার মূল অধিবেশন কক্ষের একাংশ। পরে সংসদ ভবনের বাইরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ঢুকে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ স্লোগান তোলেন অমল শিন্ডে এবং নীলম। তাঁদের হাতেও ছিল ‘স্মোক গ্রেনেড’। অভিযুক্ত চার জনকেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
নীলমের পরিবারের দাবি, মেয়ে কেন এমন কাণ্ড ঘটাল, তা তারা জানে না। তবে দীর্ঘ দিন চাকরি না থাকার কারণে নীলম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। নীলমের পরিবার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, নীলম এমফিল করেছেন এবং শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেতে কেন্দ্রীয় যে পরীক্ষায় পাশ করা বাধ্যতামূলক, তা-ও করেছেন। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বেকার। নীলমের মা সরস্বতীর কথায়, ‘‘আমার মেয়ে উচ্চশিক্ষিত, কিন্তু চাকরি পাচ্ছিল না। ও এতটাই চাপে ছিল যে প্রায়ই বলত, ‘আমার মরে যাওয়া উচিত। এত পড়াশোনা করেও আমি দু’বেলা খাবার খাওয়ার মতো রোজগার করতে পারি না।’’’
নীলমের ভাই রামনিবাস জানান, এক আত্মীয়ের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। রামনিবাস বলেন, ‘‘বোন হিসারে পড়াশোনা করত। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ও যুক্ত নয়। দু’দিন আগেই ও বাড়ি এসেছিল। কেন ও এমনটা করেছে, আমরা জানি না। ওর সঙ্গে দেখা করার পরেই জানতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘নীলম বিএ, এমএ, এমফিল করার পর নেটও পাশ করেছিল। কিন্তু বেকার ছিল। ছ’মাস আগে ও হরিয়ানার জিন্দে চলে এসেছিল এবং মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।’’
প্রসঙ্গত, সংসদের ভিতরে রংবোমা নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় ছ’জন অভিযুক্তের মধ্যে পঞ্চম জনকেও গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। বুধবার রাতে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় পঞ্চম অভিযুক্ত বিশাল শর্মাকে। বিশালের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে, সংসদে ‘স্মোক ক্র্যাকার’ বা রংবোমা নিয়ে ঢুকে পড়া দু’জন এবং বাইরে স্লোগান দেওয়া আরও দু’জনকে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি। তবে গোটা ঘটনায় ছ’জনের যুক্ত থাকার প্রমাণ মিললেও ‘ষড়’যন্ত্রীদের মধ্যে এখনও ষষ্ঠ জনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy