মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনায় আতঙ্ক। ছবি: পিটিআই।
কেউ বোন, কেউ পুত্র, কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ আবার বন্ধুকে হারিয়ে ফেলেছেন। হাসপাতালে হাসপাতালে পরিজনদের খুঁজছেন অনেকেই। কেউ আবার মর্গের বাইরে অসহায় অবস্থায় অপেক্ষা করছেন। প্রয়াগরাজে এখন এমনই দৃশ্য। মহাকুম্ভমেলার বাইরে এক পরিবার অসহায় হয়ে বসেছিল। তাদের আর্তি, ফিরে আসুক ছোট্ট ছেলেটা।
কোটি কোটি মানুষের ভিড়। সামনে যাওয়ার পথ অবরুদ্ধ। পিছন থেকে ক্রমাগত মানুষের চাপ। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হুড়োহুড়ি। এগোতে না পেরেই ব্যারিকেড ভেঙে একে একে মাটিতে পড়ে যান অনেকে। আর সেই ভিড়ের নীচে চাপা পড়ে যান অনেক পুণ্যার্থী। নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করলেন মহাকুম্ভে আসা এক পুণ্যার্থী। অন্য এক জন বললেন, স্নানের পর কোথায় যাবেন, অনেকের কাছেই সেই ধারণা স্পষ্ট ছিল না।
বুধবার প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতের সংখ্যাও বহু। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে অনেকের। গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী— তিন নদীর সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ করতে গিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন বিবেক মিশ্র। মা-বাবাকে নিয়ে পুণ্যস্নানে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এমন পরিস্থিতি হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি উত্তরপ্রদেশরই বাসিন্দা বিবেক। তাঁর অনুমান, স্নানের পর অনেক মানুষই দিশাহীন হয়ে পড়েছিলেন। কোথায় যেতে হবে, তা জানা ছিল না তাঁদের। তাই ভিড়ের সঙ্গে তাল না রেখে এ-দিক ও-দিক যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর তাতেই বিপত্তি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিবেক বলেন, ‘‘রাত আড়াইটে নাগাদ প্রচুর মানুষ সঙ্গমের তীরে এসে পৌঁছেছিলেন। অনেকেই মাথায় ভারী মালপত্র নিয়ে এসেছিলেন স্নান করতে। নদীর তীরে লোহার বেশ কিছু ডাস্টবিন রাখা ছিল, যা ভিড়ের মধ্যে অনেকেরই দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। তাতেই ধাক্কা খেয়ে বহু পুণ্যার্থী মাটিতে পড়ে যান। মাথায় থাকা মালপত্রও ছিটকে পড়ে। মালপত্র এবং মাটিতে পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরও অনেকে পড়ে যান। তাঁদের মাড়িয়েই এগোতে থাকেন অন্যেরা। চোখের সামনে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।’’
ফতেহপুরের বাসিন্দা রাম সিংহের অভিজ্ঞতা আরও ভয়ানক। ভিড়ের মধ্যে পড়ে পায়ে আঘাত পান তিনি। সাহায্যের জন্য চিৎকার করেও লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর। রামের কথায়, ‘‘কেউ এগিয়ে আসেননি। ভিড়ের চাপে বন্ধুরাও ছিটকে যান। কোথায় যাবেন, কী করবেন— কিছুই বুঝতে উঠতে পারছিলেন না। কোনওক্রমে আহত অবস্থায় ভিড়ের সঙ্গে তাল রেখে বাইরে যাওয়ার গেটের কাছে পৌঁছন। তার পর এক পুলিশকর্মীর সহায়তায় অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে যান রাম।
পদপিষ্টের ঘটনার পরই সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও যোগীকে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন বলে খবর। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে রয়েছে। পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয়, সেই কারণে ঘটনাস্থলে র্যাফ নামানো হয়েছে। একই সঙ্গে পৌঁছেছে এনএসজি-র দলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy