ছবি: পিটিআই।
রউয়া, সভে কে প্রণাম বা। দেশ বা খাতির, বিহার খাতির, গাঁও কে জিন্দগি কে আসান বানাওয়ে খাতির...
বিহার ভোটকে নজরে রেখে ওই রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের উদ্বোধনী বক্তৃতাও স্থানীয় ভোজপুরি ভাষাতেই শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় ১,৭০০ কোটি টাকার প্রকল্পের অনলাইন-উদ্বোধন তো করলেনই, সেই সঙ্গে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করলেন লকডাউনের জেরে কাজ খুইয়ে ওই রাজ্যে ফিরতে বাধ্য হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতে। লালু প্রসাদ-রাবড়ি দেবীর জমানার পরে বিহারের পিছিয়ে থাকার ছবি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের এনডিএ সরকার কী ভাবে বদলেছে, তা মনে করিয়ে দেওয়া হল বার বার। মোদী-নীতীশের পারস্পরিক প্রশংসাতেও বিজেপি-জেডিইউ জোটের মসৃণ একটা ছবি তুলে ধরার চেষ্টা স্পষ্ট। সব মিলিয়ে, জুনে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান বিহার থেকে শুরু করা যদি এনডিএ জোটের ভোট-প্রচারে ঢাকে কাঠি হয়, তবে এ দিনের এক গুচ্ছ ঘোষণার পরে ওই নির্বাচনী-বৈতরণী পার হতে পুরোদমে সাঁতার শুরু করল তারা।
রাজপুত ভোটের দিকে তাকিয়ে প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে বিজেপি যতই বিহার-ভোটের ‘বাজার গরমের’ চেষ্টা করুক, ওই রাজ্যে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষোভের কথাও বিলক্ষণ জানে তারা। তার উপরে কিছুটা হলেও বেসুরো বাজছে এনডিএ-র আর এক শরিক রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি। জোট মসৃণ করতে এবং প্রচারের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবারই দু’দিনের জন্য বিহারে যাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। করোনার পরে দিল্লির বাইরে এই প্রথম। সঙ্গে দলের তরফে ওই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীস। বৃহস্পতিবার যে মৎস্য সম্পদ প্রকল্পের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করলেন, তার আওতায় ৪-৫ বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা ঢালার পরিকল্পনা রয়েছে ২১টি রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে। কিন্তু তার শুরু এ দিনের অনলাইন অনুষ্ঠান মারফত বিহারের মাটি থেকেই করেছেন মোদী। ঠিক যেমন জুনে ছয় রাজ্যের ১১৬টি জেলায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে কাজ জোগানোর প্রকল্পের সূচনা, একই ভাবে নীতীশকে সঙ্গী করে এই ভোটমুখী রাজ্য থেকেই করেছিলেন তিনি। সারা দেশের জন্য চালু করা পশুপালনে সহায়ক ই-গোপালা অ্যাপ চালুর ঘোষণাও করেছেন অনুষ্ঠানে। দাবি করেছেন, পরে এখানেই পশু আধার নম্বর যুক্ত হলে, তা কেনা-বেচা সহজ হবে।
আরও পড়ুন: প্রদেশ কংগ্রেসের ভাগ্যে ফের ‘পরিযায়ী’ সভাপতি
আরও পড়ুন: মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ।। আগে সেনা সরাক চিন: জয়শঙ্কর
নীতীশ নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যের ৭৯% মানুষ গ্রামের বাসিন্দা। ৭৬% যুক্ত কৃষি কিংবা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে। তাই চাষিদের হাতে নগদ টাকা দেওয়া থেকে শুরু করে মাছ চাষে সরকারি উদ্যোগের কথা জোর দিয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দাবি, কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পে ৬,০০০ কোটি টাকা গিয়েছে শুধু বিহারি চাষিদের ব্যাঙ্কের খাতাতেই। কখনও গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জলের কল বসাতে জল জীবন মিশনের অগ্রগতির কথা বলেছেন, তো কখনও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিহারি-অস্মিতাকে। তাঁর দাবি, “বিহার তথা দেশের গ্রামকে আত্মনির্ভর ভারতের কেন্দ্র বানাতেই উন্মুখ সরকার।” তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের চাপা ক্ষোভ সামাল দিতে যে মোদী মরিয়া, তা স্পষ্ট তাঁর কথায়। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরতে বাধ্য হওয়া কর্মীরা যাতে আপাতত ঘরের দরজায় কাজ পান, তা নিশ্চিত করতেই জুনে গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের ঘোষণা। তার পরে এ বার তাঁদের জন্য পাকাপাকি ভাবে সেই বন্দোবস্ত করতে মৎস্য সম্পদের মতো প্রকল্প।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, করোনার কামড় থাকলেও, বিহারে ভোট হবে সময়েই— অর্থাৎ, অক্টোবরে। নির্বাচনী বিধিনিষেধ জারির আগেই তাই প্রকল্প ঘোষণার কাজ সেরে ফেলছে মোদী সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy