বিপর্যস্ত সিকিমে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই ।
সিকিমের দুর্যোগ এখনও পর্যন্ত প্রাণ কেড়েছে ১৪ জনের। নিখোঁজ আন্তত ১০৩ জন। খোঁজ নেই বহু সেনা জওয়ানেরও। মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলবার লোনক হ্রদ ফেটে সিকিমে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (জিএলওএফ)। তবে সিকিমের বুকে যে দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তা নিয়ে অতীতে বহু বার সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং গবেষকরা সিকিমে হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ ফেটে মারাত্মক বন্যা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছেন। সাবধান করেছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোও।
জিএলওএফ হয় তখনই, যখন হিমবাহ গলা জল জমে সৃষ্ট হ্রদগুলি অতিরিক্ত জল জমার কারণে বা ভূমিকম্পের মতো কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফেটে যায়। গবেষণায় আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল যে, সিকিমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দক্ষিণ লোনক হ্রদ ১৪টি বিপজ্জনক হ্রদের মধ্যে একটি, যেখানে জিএলওএফ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১২-’১৩ সালে ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার এবং ইসরোর একটি সমীক্ষায় লোনক হ্রদ সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝুঁকি তুলে ধরা হয়েছিল। হ্রদ ফেটে বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা ৪২ শতাংশ বলেও ওই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল।
২০২১ সালেও উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তখন যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামানো হয়নি। তবে শেষরক্ষা হল না। বুধবার লোনক হ্রদ ফেটে সৃষ্ট হড়পা বানে সিকিমের ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবনে প্রভাব পড়েছে।
এ ছাড়াও ২০১৬ সালে, লাদাখের ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্টের’ সোনম ওয়াংচুক, জিএলওএফ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। জিএলওএফ রোধ করার জন্য হিমবাহ থেকে সৃষ্ট হ্রদে উচ্চ ঘনত্বের পলিথিন পাইপ বসানো হয়েছিল।
২০২১ সালের একটি গবেষণাপত্রেও দক্ষিণ লোনক হ্রদকে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, ‘‘লোনক হিমবাহ ১৯৬২ থেকে ৪৬ বছরে প্রায় ২ কিমি পিছিয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আরও ৪০০ মিটার পিছিয়ে গিয়েছে। ফলে লোনক হ্রদে বিপদের সম্ভাবনা বেড়েছে। হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর মানুষ বাস করেন। ফলে তাঁদেরও বিপদ থেকে যাচ্ছে।’’
২০০১ সালের ‘সিকিম হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে’ও হিমবাহ থেকে সৃষ্ট হ্রদ ফেটে সিকিমে বিপত্তি ঘটতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy