—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তেলঙ্গানায় ক্রমেই ‘কোর ইঞ্জিনিয়ারিং’ নিয়ে পড়াশোনার প্রবণতা কমছে। ২০২০ সাল থেকে রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে এই ‘কোর বিভাগ’ (সিভিল, মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স)-এর আসন কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। আর তার জেরে গত কয়েক বছর ধরে কাজ হারাচ্ছেন এই বিভাগের কলেজ শিক্ষকেরা। একটি সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষা বলছে, চাকরি হারিয়ে বহু কলেজ শিক্ষক ডেলিভারি এজেন্টের কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে যে, এখন তেলঙ্গানায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মোট আসন ৮৬ হাজার ৯৪৩। তার মধ্যে কম্পিউটার এবং তার সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন বিভাগের আসন রয়েছে ৬১ হাজার ৫৮৭। সিভিল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসন সংখ্যা ৭,৪৫৮। ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগে রাজ্যে আসন সংখ্যা ৪,৭৫১। গত কয়েক বছর ধরে ‘কোর বিভাগে’ মোট আসনের ২৫ শতাংশ খালি থাকছে। বাধ্য হয়ে তেলঙ্গানার ১৭৫টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ‘কোর বিভাগে’ আসনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। একটু-আধটু নয়, কলেজগুলিতে ‘কোর বিভাগ’-এ আসন সংখ্যা কমেছে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ।
প্রশ্ন উঠছে, কেন ‘কোর বিভাগ’-এর বদলে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়াশোনার দিকে ঝোঁক বৃদ্ধি পাচ্ছে পড়ুয়াদের? অধ্যাপকদের একাংশ মনে করছেন, কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনার পর চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই তা নিয়ে পড়ার ঝোঁকও বাড়ছে। পাশাপাশি, কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার পর এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স), ডেটা সায়েন্স, সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে পড়ার সুযোগও তৈরি হচ্ছে। সে কারণেই ‘কোর বিভাগ’-এ পড়াশোনার আগ্রহ কমছে পড়ুয়াদের। আর তার ফল ভোগ করছেন শিক্ষকেরা।
তেলঙ্গানার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মেকানিক্যাল বিভাগে পড়াতেন অচ্যুত ভি। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর পর অর্ধেক বেতনে পড়াতে বলা হয়েছিল। বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’’ অচ্যুত জানিয়েছেন, তার পর বহু কলেজের মেকানিক্যাল বিভাগে চাকরির চেষ্টা করেও পাননি। এখন ডেলিভারি এজেন্টের কাজ করে দিনে ৬০০ টাকা পান তিনি। পাশাপাশি দু’চাকার ট্যাক্সি চালিয়ে মাসে ৪০ হাজার টাকা রোজগার করেন। অচ্যুত একা নন। তাঁর মতো অনেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ‘কোর বিভাগ’-এর শিক্ষকতার কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা এখন বিকল্প রোজগারের পথ বেছেছেন। তাঁদের দাবি, সরকার এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে এ ভাবেই কাজ হারাতে হবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ‘কোর বিভাগ’-এর অধ্যাপকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy