Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Education

Education: শিক্ষায় জরুরি অবস্থারই দশা দেখছে সমীক্ষা

'আ ফিউচার অ্যাট স্টেক— গাইডলাইনস অ্যান্ড প্রিন্সিপলস টু রিজ়িউম অ্যান্ড রিনিউ এডুকেশন' শীর্ষক ওই রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৩৪
Share: Save:

দীর্ঘস্থায়ী অতিমারি দৈনন্দিন জীবনের সব ক্ষেত্রেই জোর ধাক্কা মেরেছে। তবে শিক্ষা শিবিরের পর্যবেক্ষণ, সর্বস্তরের শিক্ষাতেই করোনার আঘাত সব চেয়ে বেশি। কতটা বেশি? ন্যাশনাল কোয়ালিশন অন দ্য এডুকেশন ইমার্জেন্সির (এনসিইই) সমীক্ষা-রিপোর্টে জানানো হয়েছে, শিক্ষায় করোনা-ক্ষত এতই গভীর যে, বলা চলে, অতিমারির দাপটে ‘শিক্ষায় জরুরি অবস্থা’র মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বছর দেড়েক বন্ধ থাকার পরে বিভিন্ন রাজ্যে অবশেষে স্কুল খুলেছে বা খুলতে চলেছে ঠিকই। কিন্তু ওই সমীক্ষা বলছে, এখন এই স্কুলে ফেরা ছাত্রছাত্রীদের কাছে কোনও ভাবেই স্বাভাবিক স্কুলে ফেরা নয়। দেশের ২৫ কোটি শিশুর অধিকাংশেরই পঠনপাঠনে চূড়ান্ত ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।

'আ ফিউচার অ্যাট স্টেক— গাইডলাইনস অ্যান্ড প্রিন্সিপলস টু রিজ়িউম অ্যান্ড রিনিউ এডুকেশন' শীর্ষক ওই রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরের মে থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ১৮ মাসে পড়ুয়াদের খুব বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে ব্যাপক উদ্যম এবং যথোচিত পরিকল্পনা নিয়ে স্কুলে পঠনপাঠন শুরু করতে না-পারলে ক্ষতির মাত্রা বাড়বে বই কমবে না। স্কুলে যারা ফিরছে, তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক পড়ুয়ার সঙ্গে অতিমারি পর্বে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল না। নিয়মমাফিক পঠনপাঠনের সুযোগও ছিল না তাদের। সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই প্রভূত ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। অথচ বিভিন্ন রাজ্য সরকার এমন ভাবে আবার স্কুল খুলছে বা খুলতে চলেছে, যেন গুরুতর কিছুই ঘটেনি!

শিক্ষার কোন কোন ক্ষেত্রে ক্ষত ও ক্ষতি বেশি? গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র, দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু এবং অভিবাসী শ্রমিকদের সন্তানদের মৌলিক ভাষা ও গণিতের দক্ষতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সমীক্ষা-রিপোর্টে। বলা হয়েছে, অনেক শিশুই পড়ার এবং লেখার অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে। স্কুলছুট হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া। করোনাকালে অনলাইন শিক্ষা যে তেমন কার্যকর হয়নি, তা-ও জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।

এই ক্ষত ও ক্ষতির সম্ভাব্য সুরাহা-শুশ্রূষারও পথ দেখানো হয়েছে রিপোর্টে। বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে শিশুদের ভাষা-দক্ষতা ফেরানোর উপরে। সেই সঙ্গে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, গণিতে শিশুদের দক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে অবিলম্বে। শিশুদের সামাজিক ও মানসিক বিকাশের জন্য যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন।

শিশুরা যাতে শিক্ষার সঙ্গে আবার ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত হতে পারে, সেই জন্য পাঠ্যক্রম এবং পড়ানোর পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা দরকার বলে জানানো হয়েছে সমীক্ষা-রিপোর্টে। এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ বলেন, "জাতীয় শিক্ষানীতিতে পাঠ্যসূচি সরল করার কথা বলা হয়েছে। সেটা বাস্তবায়িত করার ঠিক সময় এটাই।"

সামাজিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত শিশুরা যাতে আবার সক্রিয় ভাবে পঠনপাঠনে যোগ দিতে পারে, তার জন্য ব্যাপক ব্যবস্থাগ্রহণ ও তৎপর পদক্ষেপের প্রয়োজনের কথা রিপোর্টে বলা হয়েছে। জরুরি পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ এবং পড়ুয়াদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া। শিশুদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষা এবং পুষ্টি জোগানোর জন্য এখনই যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি বলেও জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শিক্ষায় গতি আনতে শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে অভিভাবক, স্কুল পরিচালন কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সরাসরি যোগাযোগ দরকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Education Pandemic survey COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy