প্রতীকী ছবি।
ইজ়রায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে সম্ভাব্য নজরদারির তদন্ত চেয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন এডিটর্স গিল্ড ও প্রবীণ সাংবাদিক মৃণাল পাণ্ডে। পাশাপাশি স্পাইওয়্যার নিয়ে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি ও কাদের বিরুদ্ধে ওই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে সরকারকে তথ্য জানানোর নির্দেশও চাওয়া হয়েছে ওই আবেদনে। নজরদারি সংক্রান্ত কয়েকটি আইনি ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ করেছেন আবেদনকারীরা। আবেদনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় সম্প্রচার মন্ত্রককে পক্ষ করা হয়েছে। এ নিয়ে পেগাসাস কাণ্ডে চারটি আবেদন পেশ হল শীর্ষ আদালতে।
সুপ্রিম কোর্টে আজ পেশ করা আবেদনে গিল্ড ও মৃণালের তরফে জানানো হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের কাজকর্মে সরকার বা তাদের সংস্থা হস্তক্ষেপ করবে না, এই ধারণার উপরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নির্ভরশীল। যাঁরা তথ্য সরবরাহ করেন তাঁদের সঙ্গে গোপনে ও নিরাপদে কথা বলা, ক্ষমতা ও দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করা, সরকারের অদক্ষতার কথা সামনে আনা এবং বিরোধী রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলা সেই স্বাধীনতারই অঙ্গ। আবেদনকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, প্রশাসন তাদের সাংবিধানিক অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করছে কি না তা জানার অধিকার ভারতের নাগরিকদের আছে। কিন্তু সংসদীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে কথা জানার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে প্রকাশ্যে বিতর্ক এড়িয়েছে ও অস্পষ্ট জবাব দিয়েছে। তাই দেশবাসীর তথ্য জানার অধিকারকে কার্যকর করতে আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন।
আবেদনকারীরা নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ চেয়েছেন। প্রথমত, ভারতীয় নাগরিকদের বৈদ্যুতিন যোগাযোগের যন্ত্রে নজরদারি ও সাঙ্কেতিক কোড ভেঙে বার্তা পড়ার (ডিক্রিপশন) যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা পেশ করুক কেন্দ্র। কেন ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা-ও লিখিত ভাবে জানাক তারা।
দ্বিতীয়ত, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে যে নজরদারি ও হ্যাকিং চালানো হয়েছে তা নিয়ে তথ্য জানাক কেন্দ্র। ইজ়রায়েলি সংস্থা ‘এনএসও’-র কাছ থেকে সরকার বা তার কোনও সংস্থা পেগাসাস বা কোনও স্পাইওয়্যার কিনেছে কি না তা জানানো হোক। সেই বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রের কী চুক্তি হয়েছে তা নিয়ে তথ্য দেওয়া হোক। স্পাইওয়্যারের দাম কী ভাবে দেওয়া হয়েছে তাও জানতে চেয়েছেন আবেদনকারীরা। পাশাপাশি কত জন ভারতীয় নাগরিকের উপরে ও কেন নজরদারি চালানো হয়েছে তা জানানোর নির্দেশ চাওয়া হয়েছে আবেদনে। কারা এই নজরদারির তালিকা তৈরি করেছিলেন তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
তৃতীয়ত, পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার কেনা ও তার মাধ্যমে হ্যাকিং ও নজরদারির ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চান আবেদনকারীরা। এ জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
চতুর্থত, সাংবাদিকদের নজরদারি থেকে রক্ষা করতে বিধি তৈরির আর্জি জানানো হয়েছে। মহিলা সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্যও আলাদা বিধি তৈরির আর্জি জানিয়েছেন আবেদনকারীরা।
পঞ্চমত, ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন, ভারতীয় টেলিগ্রাফ বিধি ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের নজরদারি সংক্রান্ত ধারাকে অসাংবিধানিক অ্যাখ্যা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন আবেদনকারীরা।
ইতিমধ্যেই পেগাসাস কাণ্ডের তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে তিনটি আবেদন পেশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই তিনটি আর্জির শুনানি হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy