রাণা কপূর ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
দিনের বড় খবর কী?
নিজেই প্রশ্নটি করে উত্তর দিচ্ছেন আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে সংযোগকারী নেতা বি এল সন্তোষ, ‘‘ইয়েস ব্যাঙ্কের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাণা কপূরের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার যোগ।’’
নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রায় ছ’বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর আরও একটি ব্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। আর সেখান থেকে মোড় ঘোরাতে গত কালই বিজেপি এ প্রচার শুরু করে, প্রয়াত রাজীব গাঁধীকে তাঁরই প্রতিকৃতি এঁকে উপহার দিয়েছিলেন মকবুল ফিদা হুসেন। দশ বছর আগে সেটিই ইয়েস ব্যাঙ্কের রাণা কপূরকে ২ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন প্রিয়ঙ্কা। কংগ্রেস গত কালই বলেছিল, চেক মারফত এই টাকা নেওয়া হয়েছে। আয়কর দফতরকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ গোটা ঘটনা নতুন মোড় দিল সরকারের অদৃশ্য ‘সূত্র’।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) সেই ‘সূত্র’ দাবি করল, হুসেনের যে ছবি প্রিয়ঙ্কা বিক্রি করেছেন, সেটির মালিকানাই তাঁর নয়। এআইসিসি এর মালিক ছিল। ‘সূত্র’ বাজারে নামতেই সক্রিয় হল বিজেপির ফৌজ। বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্য বলেন, ‘‘যে কোনও আর্থিক কেলেঙ্কারির যোগসূত্র গাঁধী পরিবারের দিকেই যায়। বিজয় মাল্যর সঙ্গে সনিয়া গাঁধী, নীরব মোদীর সঙ্গে রাহুল, এ বারে রাণা কপূরের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার যোগ সামনে এল। এটা তো ন্যাশনাল হেরাল্ডের মডেলে দুর্নীতি!’’ ইডি-সূত্র জানাচ্ছে, রাজীবের ওই ছবি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাণা কপূরের বাড়িতে রাহুল গাঁধীরও একটি প্রতিকৃতি পাওয়া গিয়েছে।
বিজেপির মুখপাত্র জি ভি এল নরসিংহ বললেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা ও রবার্ট বঢরা আসলে ‘বান্টি-বাবলি’র মতো। রবার্ট বঢরাও অন্যের জমিতে অর্থ কামিয়েছেন। প্রিয়ঙ্কাও সেই পথ অনুসরণ করেছেন। প্রশ্ন হল, রাণা কপূরকে ছবি বিক্রির বিনিময়ে কী পেয়েছেন? পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ ভাবে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি করেছেন। প্রিয়ঙ্কা চুপ কেন?’’ কাল কংগ্রেস সূত্র দাবি করছিল, প্রিয়ঙ্কা ছবি বিক্রি করেছেন নিলামে। আজ কপূরকে লেখা প্রিয়ঙ্কা ও কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওরার চিঠি ও মোবাইল মেসেজও ফাঁস করে বিজেপি। সেখানে ছবি কেনার জন্য কপূরকে রীতিমতো তদ্বির করা হয়েছিল। পরে চিঠিতে তাঁকে ধন্যবাদও জানান দুই নেতা।
পাল্টা প্রশ্ন কালও তুলেছে কংগ্রেস, আজও। দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘মোদী সরকারের গত ছ’বছরে ইয়েস ব্যাঙ্ক বাড়তি ২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। মোদীর নোটবন্দির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কপূর। ব্যাঙ্ক যখন ডুবতে বসেছিল, মোদীর ‘বন্ধু’ শিল্পপতি এই ব্যাঙ্ক থেকে ১৮০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। কপূরের সমর্থনের জন্য নিতিন গডকড়ীকে পাঠিয়েছিলেন মোদী। দিন তিনেক আগেও প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলন ‘স্পনসর’ করেছে ইয়েস ব্যাঙ্ক। এত কিছু সত্ত্বেও রাজীবের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ছবি প্রিয়ঙ্কা বিক্রি করেছেন ২ কোটি টাকা দিয়ে, সেটিই ব্যাঙ্ক ডুবে যাওয়ার কারণ? হাস্যকর নয় কি?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy