দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি মামলার তদন্তে নেমে একাধিক আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে ইডি। এমনকি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে আবগারি ‘দুর্নীতি’তে কেজরীওয়ালের যোগ থাকার কথা বলতে গিয়ে আপকে একটা ‘কোম্পানি’র সঙ্গে তুলনা করেছে ইডি। শুধু তা-ই নয়, কেজরীওয়ালকে সেই ‘কোম্পানি’র ডিরেক্টর বলেও উল্লেখ করেছে তারা। রাজনৈতিক দলকে কোম্পানির সঙ্গে তুলনা এবং তার নেতাকে ওই কোম্পানির ডিরেক্টর হিসাবে উল্লেখ করায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বৃহস্পতিবার রাতে আবগারি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল কেজরীওয়ালকে। শুক্রবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ইডি দাবি করে, আপ কেজরীওয়ালের মাধ্যমে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অপরাধ করেছে। তাদের যুক্তির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইডি বেআইনি ভাবে অর্থ লেনদেন বা পিএলএমএ আইনের ৭০ নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করেছে। কোন কোম্পানির ডিরেক্টর, ম্যানেজার, সেক্রেটারি বা অন্যান্য কোনও উচ্চপদস্থ কর্তা যদি কোনও ভাবে আর্থিক তছরুপের সঙ্গে জড়িত থাকেন তবে এই ধারা লঙ্ঘন হয়। এই ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট শাস্তির কথাও বলা আছে।
শুক্রবার আদালতে ইডি সেই ধারার কথাই বলেছে। ইডি দাবি করেছে, আপের আর্থিক বিষয় চলত কর্পোরেট কোম্পানির মতোই। সেই কোম্পানিতে শেষ কথা বলতেন কেজরীওয়াল। দলীয় তহবিলে কত টাকা আছে এবং সেই টাকা কোথা থেকে আসছে সেই সব সম্পর্কে ভাল ভাবেই জানতেন কেজরীওয়াল। দিল্লির আবগারি নীতির কারণে ব্যবসায়ীদের থেকে নেওয়া ‘ঘুষ’ বাবদ টাকা আপের তহবিলে কত পরিমাণ আসত তা অজানা ছিল না দলের সুপ্রিমোর।
আপের কোষাধ্যক্ষ বা রাজ্যসভার সাংসদ এনডি গুপ্তার বয়ানকে হাতিয়ার করে নিজেদের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থা দাবি করেছে, আপের কোষাধ্যক্ষ তাদের কাছে জানিয়েছেন, কেজরীওয়ালই দলের শেষ কথা।
ইডি আদালতে জানায়, অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনের নির্দিষ্ট ধারা মেনেই গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। আপ প্রধানের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আরও জানায়, অপরাধে সরাসরি যুক্ত ছিলেন কেজরীওয়াল। কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার জন্যই ওই আবগারি নীতি আপ প্রণয়ন করেছিল বলে দাবি করা হয়েছে।
শুক্রবার আদালতে ইডির পক্ষ তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, আবগারি মামলায় ‘সাউথ গ্রুপ’কে সুবিধা পাইয়ে দিতে টাকা চেয়েছিলেন কেজরীওয়াল। এই দাবির পক্ষে বয়ানও আছে বলে আদালতে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুধু তা-ই নয় হাওয়ালার মাধ্যমে সমস্ত টাকার লেনদেন হয়েছে। ইডি প্রথমে দাবি করেছিল আপ নেতারা এই মামলায় ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। শুক্রবার আদালতে ইডি দাবি করে, সেই টাকার অঙ্কের পরিমাণ ৬০০ কোটিতেও পৌঁছতে পারে। সেই ব্যাপারে সরাসরি কেজরীওয়ালের যোগ আছে বলে আদালতে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
ইডি আরও বলে, আবগারি মামলা থেকে প্রাপ্ত ৪৫ কোটি টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে গোয়ায় গিয়েছিল। সেই টাকা গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছিল। পাশাপাশি, পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনেও আবগারি ‘দুর্নীতি’ মামলার টাকা ব্যবহার হয়েছে বলেও দাবি ইডির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy