হরিয়ানার জমি কেলেঙ্কারি মামলায় আবার ইডির সদর দফতরে গেলেন রর্বাট বঢরা। মঙ্গলবারের পর বুধবারও তলব করা হয়েছিল লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ভগিনীপতিকে। বুধবার তাঁকে দু’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ইডি দফতরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে রবার্ট বলেন, ‘‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। আমরা প্রাসঙ্গিক বলেই আমাদের নিশানা করা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সময় পরিবর্তনশীল। আজ আমরা কষ্ট পাচ্ছি, যদি সময় বদলে যায় ওদেরও (বিজেপি) কষ্ট পেতে হবে।’’ ইডির তলব নিয়ে রবার্ট বলেন, ‘‘আমি কিছুই লুকোইনি। আমাকে দু’বার ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে। বুঝতে পারছি না, কেন সাত বছর পর একই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আমি ইডির তলব উপেক্ষা করব না।’’
২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি কর্তৃক ৭.৫ কোটি টাকায় কেনা একটি জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ, ওই জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল, যা শেষ হতে সাধারণত বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। পরে জমিটি ৫৮ কোটি টাকায় রিয়্যাল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যদিও ২০২৩ সালে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সরকার আদালতে স্বীকার করে নেয়, রবার্টের সংস্থার সঙ্গে ডিএলএফের জমি-চুক্তিতে বেআইনি কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
শুধু হরিয়ানার জমি মামলা নয়, আরও একটি মামলাতেও রবার্টের নাম জড়িয়েছে। ইডির আরও অভিযোগ, ২০০৯-এ অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে রবার্ট লন্ডনেও একটি ‘বেনামি’ সম্পত্তি কিনেছিলেন। সেই মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রিয়ঙ্কারও। গত লোকসভা ভোটের আগে লন্ডনের ওই বাড়ি নিয়ে রবার্ট ও তাঁর সচিবের কিছু ইমেলের আদানপ্রদানের ‘তথ্য’ প্রকাশ্যে আনে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যেখানে বাড়িটি মেরামতির জন্য টাকাপয়সা দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের কথা হয়েছে। লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বাড়িটি নাকি এক বছরের মাথায় বিক্রিও করে দেওয়া হয়। ওই মামলায় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতেও দীর্ঘ জেরা করা হয়েছিল রবার্টকে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রবার্টকে। তার পর আবার বুধবার তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সকালে স্ত্রী প্রিয়ঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে ইডি দফতরে আসেন তিনি। ভিতরে যাওয়ার আগে দু’জনকে আলিঙ্গন করতেও দেখা যায়। বুধবার রবার্টকে দু’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলেই খবর। তবে তাঁকে আবার এই মামলায় তলব করা হয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
মঙ্গলবারই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া গান্ধী এবং রাহুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় ইডি। বিশেষ আদালতে মামলার শুনানি হবে ২৫ এপ্রিল। সনিয়া, রাহুল ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে কংগ্রেস নেতা স্যাম পিত্রোদা, সুমন দুবের। গত শনিবার এই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া এবং রাহুলের ৬৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে ইডি।