নতুন-গড়: ওয়েনাডের কালিকাভুতে রাহুল গাঁধীর রোড-শো। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
অমেঠী মুখ ফিরিয়েছে। ওয়েনাড বরণ করে নিয়েছে তাঁকে। তাই ভোটে বিপর্যয়ের পর আজ প্রথম বার দিল্লির বাইরে বেরিয়ে ওয়েনাডেই গেলেন রাহুল গাঁধী। দুপুরে কোঝিকোড়ে বিমান বন্দরে পৌঁছনোর পরে কালিকাভুর সরু রাস্তা দিয়ে এগোল তাঁর গাড়ি। বৃষ্টির মধ্যেই পথের দু’পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। শিশু-কিশোররাও। মুখের হাসিতে, হাত নেড়ে তাঁরা শুভেচ্ছা জানালেন কংগ্রেস সভাপতিকে, তাঁদের নতুন পাওয়া তারকা সাংসদকে। ড্রামের তালে ধ্বনি উঠল, ‘‘রাহুল, রাহুল...’’। হাতের ভেজা পোস্টারগুলি জানাল, ‘‘আমরা তোমার সঙ্গে আছি।’’
বৃষ্টির মধ্যেই গাড়ির ছাদ দিয়ে মাথা বার করে রাহুল হাত নেড়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে জানাতে এগোলেন। গাড়ির গতি ধীর হলেই ঘিরে ধরেছে ভিড়। রাহুল তাঁদের কথা দিলেন, ‘‘সংসদের ভিতরে পৌঁছে দেব ওয়েনাডের সমস্যাগুলির কথা। এই কেন্দ্রটির জন্য, এখানকার মানুষের জন্য কাজ করব। যে ভালবাসা আপনারা আমাকে দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ।’’ এরই সঙ্গে বিজেপিকে নিশানা করে রাহুলের ঘোষণা, ‘‘কংগ্রেস জানে, স্নেহ ও ভালবাসার মাধ্যমেই ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’’
ওয়েনাডের নিলম্বুর, এরানাডেও রোড-শো করবেন রাহুল। কথা বলবেন ইউডিএফ নেতৃত্বের সঙ্গে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, রাহুলের এই সফর বিধানসভার উপনির্বাচনে চাঙ্গা করবে দলকে। রাহুলের সফরের মধ্যেই কেরলে কয়েক ঘণ্টা কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ রাতে এর্নাকুলমের অতিশালায় কাটিয়ে কাল যাবেন গুরুবায়ুরের প্রাচীন মন্দিরে পুজো দিতে। কেরলে বিজেপি ভোটে তেমন দাঁত বসাতে না-পারলেও কাল সেখানে দলের অভিনন্দন সভায় যোগ দেবেন মোদী। দুপুরে বিশেষ বিমানে ফিরে যাবেন দিল্লিতে।
কংগ্রেস দলীয় সূত্রের খবর, তিন দিনের কেরল সফর সেরে রাহুল যাবেন গাঁধী পরিবারের দীর্ঘদিনের গড় অমেঠীতে। দেশের অন্যান্য অংশের মতো সেখানেও দল সঙ্কটে। এই মুহূর্তে সব চেয়ে বড় সঙ্কট অবশ্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বে। রাহুলের সভাপতি থাকা নিয়ে সংশয় কাটেনি এ দিনও। দিল্লিতে দলের নেতাদের সঙ্গে বিশেষ একটা দেখাই করছেন না। কর্মসমিতি তাঁর ইস্তফার প্রস্তাব খারিজ করে তাঁর হাতেই দলের খোলনলচে বদলানোর দায়িত্ব চাপিয়েছে। কংগ্রেসের সূত্র জানাচ্ছে, কী ভাবে রাহুল সেই কাজ করবেন, তা নিয়ে এক গুচ্ছ লিখিত প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
কী সেই প্রস্তাব? এক, রাহুলকে এখনই দলের রাশ ফের হাতে নিতে হবে। যদি একান্তই চান, অন্য কেউ দল চালাক, সেই উত্তরসূরি বাছাই ও গড়েপিটে নেওয়ার দায়িত্বও তাঁর। দুই, নতুন কর্মী না-এলে কংগ্রেসের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো শক্ত। মাটির সঙ্গে যোগ আছে, এমন নেতাকর্মীদের খুঁজে বার করতে হবে। এর জন্য কয়েক মাসের প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। তিন, দলের কর্মসমিতি থেকে যাঁদের ইচ্ছে বাদ দিন রাহুল। সেই নেতাদের তুলে আনুন, যাঁরা একুশ শতকের উপযোগী ভাবনা জোগাতে পারবেন। কারণ, শুধু অতীত মেলে ধরে আজকের প্রজন্মকে কাছে পাওয়া কঠিন। বিজেপিও সেটা করে না। চার, পচমঢ়ী অধিবেশনের পথ ধরে ‘একলা চলো’ পথেই যেতে হবে এখন থেকেই। ভোটের আগে টনক নড়লে লাভ নেই। দীর্ঘমেয়াদে এটাই কংগ্রেসকে ফায়দা দেবে।
দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘দল পালাবদলের পর্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তার গতি একটু ঢিমে হলেও হারের কারণের উৎসগুলি খতিয়ে দেখে রোগ নিরাময়ের আসল ওষুধটি খুঁজে বার করতেই হবে।’’ রাহুলকে বাদ দিয়ে কি সেটি হবে? অভিষেকের জবাব, ‘‘একশো ভাগ রাহুল গাঁধীকে সঙ্গে নিয়েই হবে। তিনিই কংগ্রেসের সভাপতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy