Advertisement
E-Paper

দুর্দিনে খাবার জুগিয়েছিলেন! ১৪ বছর পর সেই সব্জি বিক্রেতাকে খুঁজে বার করলেন ডেপুটি পুলিশ সুপার

যুবক এগিয়ে এলেন সব্জি বিক্রেতার কাছে। প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘‘চিনতে পারছেন আমাকে?’’ সঙ্গে সঙ্গে স্যালুট ঠুকে সব্জি বিক্রেতার উত্তর, ‘‘চিনব না আবার! খুব ভাল ভাবে চিনি।’’

সব্জি বিক্রেতা সলমন খানের সঙ্গে গোয়ালিয়রের বেহাত ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ সুপার সন্তোষ পটেল (গোলাপি রঙের জামা পরা) । ছবি: সংগৃহীত।

সব্জি বিক্রেতা সলমন খানের সঙ্গে গোয়ালিয়রের বেহাত ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ সুপার সন্তোষ পটেল (গোলাপি রঙের জামা পরা) । ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪২
Share
Save

রাস্তার পাশে সব্জি বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশের একটি গাড়ি এসে থামল। গ্রাহকদের ভিড়ের মাঝেই সব্জি বিক্রেতার চোখ গেল পুলিশের গাড়িটির দিকে। হঠাৎ পুলিশ কেন? কোনও অপরাধ করেছেন না কি? আতঙ্কে ছ্যাঁৎ করে উঠেছিল তাঁর বুক। তার পরই দেখলেন গাড়ি থেকে নেমে আসছেন এক যুবক। ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া মুখে হাসি ফুটল সব্জি বিক্রেতার।

যুবক এগিয়ে এলেন সব্জি বিক্রেতার কাছে। প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘‘চিনতে পারছেন আমাকে?’’ সঙ্গে সঙ্গে স্যালুট ঠুকে সব্জি বিক্রেতার উত্তর, ‘‘চিনব না আবার! খুব ভাল ভাবে চিনি। আপনি আমার কাছে সব্জি নিতে আসতেন।’’ তার পর পরস্পরকে আলিঙ্গনও করলেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর আবার দেখা। স্মৃতিচারণায় কিছু ক্ষণ ডুব দিলেন দু’জনেই। তার পর পুরনো বন্ধুর হাতে এক প্যাকেট মিষ্টি এবং কিছু টাকা দিয়ে আবার গাড়িতে উঠে চলে যান।

পুলিশের গাড়িতে যে যুবক এসেছিলেন তিনি আর কেউ নন, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিরের বেহাত ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ সুপার সন্তোষ পটেল। সব্জি বিক্রেতা সলমন খানের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন ডেপুটি পুলিশ সুপারের পদে যোগ দিয়েই। না, সন্তোষ তাঁর দুর্দিনের কথা ভোলেননি। আর ভোলেননি তাঁর দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো সব্জি বিক্রেতা সলমনকেও। আর সেই কৃতজ্ঞতাই তাঁকে টেনে নিয়ে এসেছিল সলমনের কাছে। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে সন্তোষ বলেন, ‘‘পান্নায় আমার বাড়ি। পরিবারের প্রথম স্নাতক উত্তীর্ণ আমি। সংসারের অভাব উপেক্ষা করে ভোপালে চলে এসেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে। তার পর পাবলিক সর্ভিস কমিশনের জন্য প্রস্তুতি নিই।’’ সন্তোষ জানান, সেই সময় অর্থের এতই টান ছিল যে, ঠিক মতো খাবার জুটত না। খাবার কেনার টাকাও থাকত না মাঝেমধ্যে। তখন সলমনই তাঁর খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন। কখনও আবার বিনামূল্যে সব্জিও দিতেন। তাঁর কথায়, ‘‘সলমনের ঋণ আমি কোনও দিন ভুলব না।’’ তাই ডেপুটি পুলিশ সুপার পদে যোগ দিয়েই সলমনের কাছে ছুটে এসেছেন সন্তোষ।

ভোপালের অপ্সরা টকিজ়ের কাছেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন সন্তোষ। আর তার ঠিক কাছেই সব্জি বিক্রি করতেন সলমন। এখনও সেখানেই তাঁর অস্থায়ী দোকান রয়েছে। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে সলমন বলেন, ‘‘পুলিশের গাড়ি দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। কিন্তু যখন পটেল স্যরকে দেখলাম, আমার পুরনো বন্ধুকে আবার দেখতে পেয়ে ভয় কাটল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে প্রতি দিন প্রচুর গ্রাহক আসেন। আমার মুখ কেউ মনে রাখে না। কিন্তু পটেল আমাকে মনে রেখেছেন। ১৪ বছর পরেও তাই আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। আমি আপ্লুত। ভাবিনি যে আবার দু’জনের দেখা হবে। স্বপ্ন সত্যি হল।’’

Gwalior dsp

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}