ফাইল ছবি
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা কংগ্রেস ছাড়ার সময় অভিযোগ করেছিলেন, তিনি যখন রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, রাহুল তাঁর কথা না শুনে পোষা কুকুর পিডি-কে বিস্কুট খাওয়াতে বেশি ব্যস্ত ছিলেন!
বুধবার কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে হার্দিক পটেল অভিযোগ তুললেন, সমস্যার কথা বলার সময়ে রাহুল গান্ধী মোবাইলে মেসেজ পড়তে বেশি মন দেন! যখন কংগ্রেসের নেতাদের সক্রিয় ভূমিকার প্রয়োজন হয়, তখন শীর্ষনেতারা বিদেশে ছুটি কাটাতে বেশি ব্যস্ত থাকেন। সরাসরি রাহুলের নাম না করলেও সে দিকেই ইঙ্গিত করে সনিয়া গান্ধীকে পাঠানো ইস্তফাপত্রে হার্দিক লিখেছেন, দিল্লি থেকে কংগ্রেসের নেতারা গুজরাতে এলে, গুজরাতের কংগ্রেস নেতারা ঠিক সময়ে চিকেন স্যান্ডউইচ পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে বেশি মন দেন!
তিন দিন আগেই উদয়পুরে চিন্তন শিবিরে কংগ্রেস তরুণ নেতাদের নেতৃত্বে তুলে আনতে উপর থেকে নিচুতলা পর্যন্ত সংগঠনের ৫০ শতাংশ পদে ৫০ বছরের কমবয়সিদের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বুধবার গুজরাত কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি, ২৮ বছর বয়সি হার্দিক পটেল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর পরে রাজস্থানের ডুঙ্গারপুরের বিধায়ক, রাজ্যের যুব কংগ্রেসের সভাপতি গণেশ ঘোগরা পদত্যাগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিধায়ক হয়েও তিনি কোনও গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না।
এর আগেও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জিতিন প্রসাদ, সুস্মিতা দেবের মতো তরুণ প্রজন্মের নেতানেত্রীরা কংগ্রেস ছেড়েছেন। এ বার হার্দিকের ইস্তফার পরে কংগ্রেসের অন্দরমহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, যে তরুণদের কংগ্রেসের নেতৃত্বে তুলে আনতে রাহুল মরিয়া, সেই তরুণরাই কি রাহুলের উপরে আস্থা হারাচ্ছেন? পাটীদার আন্দোলনের নেতা হার্দিককে দলে টানতে রাহুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। হার্দিকও রাহুলের প্রতি মুগ্ধ ছিলেন। ফলে এই প্রশ্ন আরও বড় করে উঠছে। চলতি বছরের শেষে গুজরাত নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ধাক্কা খেল কি না, সেই প্রশ্নও থাকছে।
চিন্তন শিবিরের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার রূপরেখা তৈরি করতে বুধবার কংগ্রেসের সদর দফতরে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকদের বৈঠক বসেছিল। সেই সময়ই হার্দিকের পদত্যাগের খবর প্রকাশ নয়। বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, গুজরাতের নেতা শক্তিসিন গোহিল, গুজরাতের ভারপ্রাপ্ত নেতা রঘু শর্মা হাজির ছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠকের মধ্যেই সকলে বলেন, তাঁরা এমনটাই আশা করছিলেন। মে মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুজরাত সফরে যাওয়ার কথা। সে সময়েই হার্দিক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন।
কংগ্রেসের দাবি, মূলত দু’টি কারণে হার্দিক কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির দিকে পা বাড়াচ্ছেন। এক, কংগ্রেস পাটীদার সমাজের নেতা নরেশ পটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরেই হার্দিক আশঙ্কা করেন, পাটীদার নেতা হিসেবে তাঁর গুরুত্ব কমবে। তার পর থেকেই তিনি দলের উপরে চাপ তৈরি করতে শুরু করেন। নরেশ পটেলকে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করতে পারে বলে জল্পনাতেও হার্দিক ভয় পেয়ে যান। উল্টো দিকে হার্দিক গত ছয় মাস ধরেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। পাটীদার আন্দোলনের সময় তাঁর বিরুদ্ধে যে সব মামলা দায়ের হয়েছিল, সেগুলিও বিজেপি সরকার প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে নির্বাচনে লড়তে এই সব মামলা বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে হার্দিকের ভয় ছিল। গত ১০ মে রাহুল গুজরাতের দাহোদে জনসভা করতে গিয়েছিলেন। উদয়পুরে চিন্তন শিবিরে না গেলেও হার্দিক সেখানে হাজির ছিলেন। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, হার্দিক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন জেনেই রাহুল সভায় তাঁর নাম উল্লেখ করেননি। হার্দিকের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকও করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy