Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
USA

সুর নরম ট্রাম্পের, সংশয় থাকছেই

সোমবার ট্রাম্প টুইট করে জানান, অভিবাসন বন্ধের সরকারি নির্দেশে শীঘ্রই তিনি সই করতে চলেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি এএফপি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:০৬
Share: Save:

চাপের মুখে পড়ে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে অভিবাসন ‌(ইমিগ্রেশন) নীতি নিয়ে সুর নরম করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানালেন, পাকাপাকি নয়, আপাতত ৬০ দিনের জন্য আমেরিকায় কিছু অভিবাসন বন্ধের নির্দেশ জারি করতে চলেছে তাঁর প্রশাসন। ওই সময়ে বন্ধ রাখা হবে গ্রিন কার্ড (স্থায়ী ভাবে আমেরিকায় থাকার ভিসা) ইস্যুর কাজ। ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিলেন, নতুন নির্দেশের কোপে পড়তে হবে না এইচ-১বি ভিসায় কাজ করতে আসা ভিন্ দেশিদেরও। কিন্তু সত্যিই ট্রাম্পের নিশানা শুধু গ্রিন কার্ড কি না, কিংবা ৬০ দিন পরে এই নীতি ফেরানো হবে কি না— এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর অমিল।

সোমবার ট্রাম্প টুইট করে জানান, অভিবাসন বন্ধের সরকারি নির্দেশে শীঘ্রই তিনি সই করতে চলেছেন। বলেছিলেন, বিপর্যয়ের আবহে মার্কিন নাগরিকদের চাকরি সুরক্ষিত রাখতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু নিজের দেশে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। প্রশ্ন ওঠে, এই কঠিন সময়েও ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে গবেষক বা ব্যাঙ্ক কর্মী, মার্কিন মুলুকে ভিন্ দেশি বহু পেশাদার যখন লড়ে যাচ্ছেন, তখন প্রেসিডেন্টের এই নির্দেশ কী বার্তা দেবে তাঁদের?

ট্রাম্প পাল্টা দাবি করেন, করোনার জেরে কাজ খুইয়েছেন বহু মার্কিন (শুধু লকডাউন শুরুর পরেই ২.২ কোটি)। তাই ঘরবন্দি দশা শেষ হলে, চাকরির লাইনে সবার আগে ওই মার্কিন নাগরিকদেরই দেখতে চান তিনি। সেই কারণেই অভিবাসনে কড়াকড়ি। সিদ্ধান্ত, আপাতত গ্রিন কার্ড বন্ধের। তবে তাঁর আশ্বাস, এই নীতি ৬০ দিনের জন্য। তার পরে অর্থনীতির হাল দেখে সিদ্ধান্ত নেবে হোয়াইট হাউস। এইচ-১বি, এল-১ এর মতো যে সমস্ত ভিসায় বিভিন্ন পেশার দক্ষ কর্মীরা মার্কিন মুলুকে কাজ করতে আসেন, নয়া নীতিতে তার উপরে কোপ পড়বে না বলেও ইঙ্গিত তাঁর। ট্রাম্পের কথায়, “এই নীতি তাঁদের রুখতে, যাঁরা পাকাপাকি ভাবে আমেরিকায় থাকতে চান।…যাঁরা গ্রিন কার্ড প্রত্যাশী।…যাঁরা কিছু দিনের জন্য এখানে কাজ করে ফিরে যাবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য নয়।” ট্রাম্পের এই ঘোষণায় ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের স্বস্তি ফেরার কথা। কিন্তু এখনও প্রশ্ন বিস্তর!

প্রথমত, ৬০ দিন পরে কড়াকড়ি তুলে নেওয়ার কথা বলেনি হোয়াইট হাউস। শুধু পরিস্থিতি বুঝে বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে। তার মানে কি ধাপে ধাপে গ্রিন কার্ডের সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছেন ট্রাম্প? মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে দেখা হয় এই গ্রিন কার্ডকে। এই কার্ড পেতে নাম লিখিয়ে রাখা অনাবাসী ভারতীয়ের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। প্রশ্ন উঠছে, আগামী বছরে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নিবাচনকে পাখির চোখ করে ফের জাতীয়তাবাদের জিগির তুলতে কি গ্রিন কার্ডে কোপ মারবেন ট্রাম্প? দ্বিতীয়ত, ট্রাম্পের দাবি, করোনা-সঙ্কট মেটার পরে কাজ খোয়ানো মার্কিনদের বদলে তুলনায় কম বেতনের ভিন্ দেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ করতে চান তিনি। অভিবাসনে কড়াকড়ি সেই কারণেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, গ্রিন কার্ডের আবেদন তো করবেন তাঁরা, যাঁরা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দিন কাজ করেছেন এবং রয়েছেন মার্কিন মুলুকে! তা হলে শুধু ওই ছাড়পত্র আটকে লাভ কী? নাকি কম বেতনের কর্মী আটকাতে এর পরে পর্যায়ক্রমে কোপ পড়বে অন্য ভিসার উপরেও? ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের রাতের ঘুম কেড়ে কমবে এইচ-১বি ভিসার সংখ্যাও?

তাই ট্রাম্প-নির্দেশিকার খুঁটিনাটি দেখার অপেক্ষায় ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। নজর রাখছে বিদেশ মন্ত্রকও।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

USA Donald Trump Green Card H1b Visa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy