আগরার পর এ বার মুম্বই। আবার স্ত্রীকে দায়ী করে আত্মহত্যা করলেন এক যুবক। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মাসির বিরুদ্ধেও। মুম্বইয়ের একটি হোটেল থেকে নিশান্ত ত্রিপাঠী নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত্যুর আগে তাঁর সংস্থার ওয়েবসাইটে স্ত্রী এবং মাসির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলে চিঠিও লিখে গিয়েছেন নিশান্ত।
নিশান্তের স্ত্রী অপূর্বা পারেখ এবং মাসি প্রার্থনা মিশ্রের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নিশান্তের দেহ হোটেলের একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত্যুর তিন আগে ওই হোটেলে উঠেছিলেন নিশান্ত। ঘটনার দিন হোটেলের দরজার বাইরে একটি বোর্ডে লিখে দেন, ‘আমাকে বিরক্ত করবেন না’। তার পরই হোটেলের বাথরুম থেকে নিশান্তের দেহ উদ্ধার হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিশান্তের দেহ প্রথমে দেখতে পান হোটেলের এক কর্মী। ঘটনার দিন অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে দরজার তালা বাইরে থেকে খুলে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন ওই কর্মী। তখনই তিনি নিশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ম্যানেজারকে জানান। পুলিশ এসে পরে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তদন্তের সময় পুলিশ একটি চিঠিও উদ্ধার করে। সেই চিঠি সংস্থার ওয়েবসাইটে লিখে গিয়েছিলেন নিশান্ত। তাঁর ল্যাপটপ থেকে সেই চিঠি উদ্ধার করে পুলিশ। স্ত্রীকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করার পাশাপাশি তাঁর প্রতি যে অগাধ আস্থা এবং ভালবাসা ছিল চিঠিতে সেটিও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পুলিশ যে চিঠি উদ্ধার করেছে তাতে স্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখা, ‘‘তুমি যখন এই চিঠিটা পাবে, তত ক্ষণে আমি পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেব। জীবনের শেষ মুহূর্তে তোমার প্রতি আমার ঘৃণা, বিদ্বেষ নয়, ভালবাসা রইল। আজীবন তা থেকে যাবে। ফিকে হতে দেব না।’’ নিশান্ত আরও লেখেন, ‘‘আমার মা জানে, কী লড়াইয়ের মধ্যে বেঁচে ছিলাম। কিন্তু তুমি আর প্রার্থনা মাসি আমাকে বাঁচতে দিলে না। তোমাদের কাছে অনুরোধ, মাকে শেষ করে দিয়ো না। অনেক কষ্ট পেয়েছেন। এ বার একটু শান্তিতে বাঁচতে দাও মাকে।’’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আগরার বাড়ি থেকে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মানবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়ো করে নিজের বক্তব্য রেকর্ড করেন যুবক। সেখানে প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘পুরুষদের জন্যও একটু ভাবুন। নয়তো অভিযোগ চাপানোর জন্য কোনও পুরুষই আর অবশিষ্ট থাকবেন না।’’ এর পরে নিজের হাতে কাটা দাগ দেখান তিনি। দাবি করেন, এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তিনি। ভিডিয়োর শেষে মানব হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আমার মৃত্যুর পরে আমার বাবা-মাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না।’’ এর পরেই মানবের বাবা পুত্রবধূর বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মানবের স্ত্রী সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন। মত্ত অবস্থায় তাঁকে মারধরও করতেন। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি অতিরিক্ত মদ্যপান করতেন। বহু বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন। আমি ওঁকে তিন বার বাঁচিয়েছিলাম। মত্ত অবস্থায় আমায় মারধরও করতেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে অনেক বার জানিয়েছি। ওঁরা আমল দেননি।’’