বাঁ দিক থেকে শিবরাজ সিংহ চৌহান, রমন সিংহ এবং বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।
ভোটের ফল সামনে আসতেই তিন রাজ্যের তিন রাজনীতিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হল বিজেপির অন্দরমহলে। মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান পঞ্চম বার দলকে ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার তালিকায় তিনি এগিয়ে। তেমনই রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ে বিজেপির জয়ের অন্যতম কারিগর মনে করা হচ্ছে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে— রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে ও ছত্তীসগঢ়ের রমন সিংহ। তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরুণ সিংহ জানিয়েছেন, তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একাধিক নাম উঠে এলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলের সংসদীয় বোর্ড।
নিজে তো রাজকীয় প্রত্যাবর্তন করেছেনই, মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে পঞ্চম বারের জন্য জিতিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন শিবরাজ। দলের পক্ষে তাঁকে আবার এক কোণায় ঠেলে দেওয়া এখন বেশ কঠিন। কোণঠাসা হয়েও শেষবেলায় টিকিট পেয়ে উজ্জীবিত শিবরাজের প্রায় ১৬৮টি ছোট-বড় রাজনৈতিক সভা যেমন ভোট টেনেছে, তেমনি শিবরাজ সরকারের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্পের হাত ধরেই মূলত মধ্যপ্রদেশে হারা জমি জেতা গিয়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসাবে শিবরাজ ছাড়াও তালিকায় উপরের দিকে রয়েছেন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সমস্যা হল, যে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে এই অকল্পনীয় জয় এসেছে, তাঁকে সরিয়ে দিলে দলের মধ্যে ভুল বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে লোকসভার আগে বিরোধী আক্রমণের মুখে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই তুল্যমূল্য বিচারে আজকের ফলের পরে শিবরাজের কুর্সি এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন অনেকে।
অন্য দিকে, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ে পাঁচ বছর বাদে ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে বিজেপি। মরুরাজ্যেও একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। তাঁদের অধিকাংশই জিতেছেন। কিন্তু নিজের পাশাপাশি প্রায় এক ডজন ঘনিষ্ঠ বিধায়ককে জিতিয়ে এনে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নিজের নাম তুলতে সক্ষম হয়েছেন দু’বারে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। তবে তাঁর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সম্পর্ক মসৃণ নয়। তুলনায় এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে রয়েছেন জয়পুর রাজপরিবারের মেয়ে সাংসদ তথা বিদ্যাধরনগরের প্রার্থী দিয়া কুমারী। রাজপরিবারের প্রতিনিধি সিন্ধিয়াকে রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বহীন করে দিতেই দিয়া কুমারীকে সামনের সারিতে তুলে আনার কৌশল অমিত শাহেরা নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া দৌড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। জল্পনা রয়েছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের নাম ঘিরেও। অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরে রয়েছেন তিজারা বিধানসভা কেন্দ্রের সন্ন্যাসী প্রার্থী বাবা বালকনাথও। হিন্দুত্বের বার্তা দিতে যোগী আদিত্যনাথের মতো বালকনাথকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
একই চিত্র ছত্তীসগঢ়ে। ওই রাজ্যে দল যে জিততে পারে সম্ভবত সে কথা ভাবেননি দলের অধিকাংশ সমর্থকই। জয়ের পরে কুর্সির দৌড়ে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ, দলের অন্যতম হেভিওয়েট মুখ যাঁর কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পরিচিতি রয়েছে। এ ছাড়া দৌড়ে রয়েছেন প্রাক্তন আমলা ওপি চৌধুরি। যিনি দলে অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তালিকায় নাম রয়েছে আর এক প্রাক্তন আমলা তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি অরুণ সাউ। রাজ্যের জনজাতি জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ তথা প্রার্থী রামবিচার নেতামের নামও আলোচনায় রয়েছে। এ বারের জয় থেকে স্পষ্ট, পাঁচ বছর আগে যে জনজাতি ভোট বিজেপিকে ছেড়ে দিয়েছিল, সেটা ফের গেরুয়া শিবিরে ফিরে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy