বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি
বাংলাদেশের প্রধান মৌলবাদী দল জামাতে ইসলামির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের একাংশের যোগাযোগ ও সারদার কোটি কোটি টাকা লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে সরব হচ্ছে ঢাকা। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি শনিবার ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। তার আগে কাল নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে। এ দিন ঢাকা ছাড়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে মাহমুদ আলি জানান, দু’টি বৈঠকেই তাঁরা এ বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানাবেন। ভারত সরকার যাতে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেয়, সেই দাবিও করবেন তাঁরা।
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর এই সফরে সেই বৈঠকের আলোচ্যসূচিও চূড়ান্ত করা হবে। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের খবর, মোদীর সঙ্গে বৈঠকেও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি উত্থাপন করতে চলেছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ আলি এ দিন ঢাকায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ভারত এত দিন বাংলাদেশকে বলে এসেছে আমাদের-জঙ্গি দুষ্কৃতীদের তোমাদের মাটিতে ঘাঁটি গাড়তে দেবে না। নতুন পরিস্থিতিতে এ বার বাংলাদেশ সেই একই কথা ভারতকে বলতে চলেছে।” বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, সীমান্ত পার হয়ে কোটি কোটি টাকা মৌলবাদীদের হাতে পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে। জামাতে ইসলামির ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেসের এক রাজ্যসভার সাংসদের ব্যবস্থাপনায় এই টাকা লেনদেন হয়েছে। এমন একটা সময়ে সেই টাকা গিয়েছে, যখন নাশকতা-সন্ত্রাস করে শেখ হাসিনা সরকারকে অপসারণের চক্রান্তে লিপ্ত ছিল জামাতে ইসলামি। বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বেগে ঢাকা।
বিদেশ মন্ত্রকের ওই কর্তা বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টে অনুযায়ী সাহায্য সহযোগিতার বিষয়টি এখনও অব্যাহত রয়েছে। পুলিশি অভিযানের মুখে জামাতে ইসলামির দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ছে। রাজ্যের শাসক দলের এক শ্রেণির নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় তারা কলকাতা ও রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় বহাল তবিয়তে বসবাস করছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনে জামাতের এই সব দুষ্কৃতী সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে কাজ করেছে বলেও বাংলাদেশ সরকার জানতে পেরেছে। বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ আলি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগের কথা তো তুলবেনই, পশ্চিমবঙ্গে জামাতের আশ্রয়-শিবিরগুলি ভাঙার দাবিও জানাবেন। বিদেশমন্ত্রী এ দিন জানান, গোয়েন্দা রিপোর্ট হাতে আসার পরে সীমান্ত পার থেকে জামাতের হাতে কী ভাবে, কোন পথে টাকা এসেছে, তার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জামাতের দুষ্কৃতীরা যাতে আশ্রয় না-পায়, সে বিষয়ে দিল্লির অঙ্গীকার চাইবে ঢাকা।
এক মাস আগে ঢাকা সফরে এসে তিস্তা ও স্থলসীমা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আশ্বস্ত করে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এ বিষয়ে আরও তাগাদা দিতে ছয় সচিবকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ আলি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, দিল্লিতে যৌথ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি মাহমুদ আলির এই সফরে ২৭শে মোদী-হাসিনা বৈঠকের আলোচ্যসূচিও চূড়ান্ত হবে। সেখানেও সারদার টাকা জামাতের হাতে যাওয়া ও পশ্চিমবঙ্গে জামাতের দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। সেখান থেকে রবিবার তিনি নিউ ইয়র্কে রওনা হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy