যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিংহ চৌহানের পথেই এ বারে দেবেন্দ্র ফডণবীস। ঔরঙ্গজ়েবের সমাধি ভাঙা নিয়ে নাগপুরে হিংসায় যে সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, তা ‘পূরণ’ করতে দাঙ্গাকারীদের বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের ওই হিংসায় মুখ পুড়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকারের। এই অবস্থায় মহারাষ্ট্রেও বুলডোজ়ার নীতি চালু করে তিনি নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
শনিবার এক অনুষ্ঠানে ফডণবীস জানান, ওই হিংসায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষয়তির হিসাব দাঙ্গাকারীদের থেকে আদায় করবে সরকার। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা ছাড়াও টাকা মেটাতে না পারলে বুলডোজ়ার চালিয়ে হিংসায় জড়িতদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে।
বাবরি মসজিদের মতোই ঔরঙ্গজ়েবের সমাধিও ভেঙে ফেলার দাবি তুলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা মহলে প্রচার এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি চালাচ্ছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ বেশ কয়েকটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। গত ১৭ মার্চ সে রকমই একটি বিক্ষোভ থেকে অশান্তি ছড়ায়। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে জারি করা হয় কার্ফুও। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত এই হিংসার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিয়োর ভিত্তিতে ১০৪ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১২ জন নাবালক-সহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা সমাজমাধ্যমে ঘটনার আগে-পরে গুজব ছড়িয়েছে বা এখনও সক্রিয়, তাদেরও ছাড়া হবে না।
তবে এত বড় গোলমালের পিছনে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও দেবেন্দ্রর হাতেই। ফলে গোয়েন্দা ব্যর্থতা মেনে নিলে তাঁকেই জবাবদিহি করতে হবে বুঝেই এমন কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওই হিংসার পরপরই বহিঃশত্রুর হাত, এমনকি বাংলাদেশ যোগ নিয়েও সরব হয়েছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। মুখ্যমন্ত্রী সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে না দিলেও জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে তেমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে গোয়েন্দারা আরও গভীরে গিয়ে তদন্তে করে দেখবেন, সে রকম কোনও যোগ আছে কি না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)