তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল যে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ হারাতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত প্রায় এক মাস আগেই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-তে বিজেপির পছন্দের ব্যক্তি চেয়ারম্যান হননি। ফলে পাল্টা পদক্ষেপে সংসদের স্থায়ী কমিটির প্রশ্নে তৃণমূলের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে পুনর্গঠিত হয়েছে সব সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পুনর্বিন্যাসের আগে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদটি ছিল তৃণমূলের দখলে। ওই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন কমিটিতে সুদীপ সদস্য হিসেবে থাকলেও কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এর ফলে সংসদের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও একটিও স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেল না তৃণমূল।
এর পিছনে প্রতিহিংসার রাজনীতি রয়েছে বলে সরব হয়েছেন সুদীপ। তাঁর দাবি, সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ও সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল তাঁকে ফোন করে ইঙ্গিত দেন, নতুন কমিটিতে তাঁকে বা তাঁর দলকে চেয়ারম্যান পদ দেওয়া যাবে না। ঘরোয়া ভাবে কেন্দ্র জানায়, যে হেতু রাজ্য বিধানসভায় পিএসি-সহ একটিও স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ বিজেপি বিধায়ককে দেওয়া হয়নি তাই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পরেই সুদীপ রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ওই দাবির পিছনে কতটা সত্যতা রয়েছে তা জানতে চান। সুদীপ বলেন, ‘‘বিধানসভার স্পিকার তাঁকে জানিয়েছেন পিএসি-সহ ৯টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ বিজেপিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।’’ সুদীপের কথায়, ‘‘কিন্তু যে বিধায়কদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে তাঁরা যদি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সে ক্ষেত্রে কার কী করার আছে!’’
অন্য দিকে বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যে ৭০ জন বিধায়ক থাকা সত্ত্বেও বিধানসভার পিএসি-র দায়িত্ব প্রথমে দেওয়া হয় মুকুল রায়কে। যিনি বিজেপির টিকিটে জিতে এসে ঘোষিত ভাবে তৃণমূল যোগ দিয়েছেন। তার পরে দায়িত্ব দেওয়া হয় কৃষ্ণ কল্যাণীকে। তিনিও বিজেপির বিধায়ক। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান তাঁদের পছন্দ মতো বিধায়ককে না-দেওয়ার প্রতিবাদে ৯টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাখ্যান করে বিজেপি। ফলে কমিটির কাজের স্বার্থে পরবর্তী পদক্ষেপে তৃণমূলের বিধায়কদের ওই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। বেছে বেছে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়কদের পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করে তাঁদের অধিকার হরণ করা হয়েছে বলে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদ পাওয়া লকেট। তাঁর কথায়, ‘‘ইট ছুড়লে পাটকেল খেতেই হয়। তাই বঞ্চনার অভিযোগ তৃণমূলের সাজে না।’’
অন্য দিকে তৃণমূলের অভিযোগ, এ হল নরেন্দ্র মোদী সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রকাশ। বিরোধী কোনও স্বর শুনতে প্রধানমন্ত্রী যে রাজি নন সেই মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে সরকারের ওই সিদ্ধান্তে। সুদীপ বলেন, ‘‘সংসদীয় প্রথায় বিরোধীদের যে ভূমিকা রয়েছে শাসক শিবির সেই বিষয়টি বুঝতে ব্যর্থ। সংসদের ইতিহাসে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। ওই বঞ্চনা নথিভুক্ত হয়ে থাকল। বিজেপি নেতাদের বুঝতে হবে তাঁদের দল চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে না।এক দিন তাঁদেরও ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy