—ফাইল চিত্র।
দেশের নির্বাচন দফতরের প্রধান যতই বলুন ব্যালট পেপার এখন অতীত, তার বিকল্প ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন কিন্তু কিছুতেই পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে পারছে না। এবং অনেক ক্ষেত্রে অনাস্থা এতটাই যে, ইভিএম ‘নিষিদ্ধ’ করার দাবিও উঠছে।
আস্থাহীনতার ইঙ্গিত মিলেছে দেশের নির্বাচন কমিশনের ফেসবুক পেজেই। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ দিল্লির নির্বাচন সদনে দেশের নির্বাচক তথ্য যাচাই কর্মসূচির (ইলেক্টরস ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম বা ইভিপি) সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা-সহ কমিশনের শীর্ষ কর্তারা। সেই উপলক্ষে কমিশন তাদের ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচির ‘লাইভ’ বা সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থাও করেন।
সেই লাইভ চলাকালীন পেজে অজস্র ‘কমেন্ট’ আসে আমজনতার কাছ থেকে। ইভিএমে নিজেদের ‘অবিশ্বাসের’ কথা বলেছেন অনেকে। ইভিপি সংক্রান্ত প্রশ্নের অধিকাংশেই দাবি করা হয়, ইভিএম নিষিদ্ধ করা হোক। গণতন্ত্র রক্ষার্থেই ইভিএম নিষিদ্ধ করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। সে-ক্ষেত্রে ব্যালট ফেরানোর দাবিও উঠেছে।
কিছু কিছু মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতার পক্ষে সওয়াল করেছে কমিশন। আগেও অনেক বার তারা জানিয়েছে, ইভিএম সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ, তা বিকৃত করা যায় না। এ দিন ইভিএম সংক্রান্ত প্রশ্নের ক্ষেত্রে একই কথা ফের বলেছে কমিশন।
ইভিএমের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছে অনেক আগেই। এ বার তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচির অন্যতম প্রধান দাবি ছিল, ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট পেপার ফেরাতে হবে। ওই দলের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে পুরভোট হবে ব্যালটেই। লোকসভা ভোটের পরে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তোলে অন্য কয়েকটি দলও।
কমিশন অবশ্য আর কোনও ভাবেই অতীতে ফিরতে চায় না। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অরোরা সম্প্রতি রাজ্যে এসে তা জানিয়ে গিয়েছেন। তিনি ব্যালট
পেপার ফেরানোর দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন। অরোরা বলেছিলেন, ‘‘যন্ত্রে ত্রুটি হতে পারে। তবে ত্রুটি আর কারচুপি সম্পূর্ণ পৃথক দু’টি বিষয়। ইভিএমের প্রোগ্রামিং কোনও ভাবেই বদলানো সম্ভব নয়। এর বিরুদ্ধে কিছু বললে ধরে নিতে হবে, অপরাধমূলক উদ্দেশ্য রয়েছে।’’ হেরে গেলেই কেন ভোটযন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সর্বময় কর্তা।
ইভিএমের পক্ষে কমিশনের কর্তারা নিয়মিত সওয়াল করেছেন এবং করছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছে কমিশন। আমজনতাকে বুঝিয়েছে তারা। তার পরেও ইভিএম যে আমজনতার সম্পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে পারেনি, রবিবেলায় ফের তা প্রমাণিত হল বলে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের অভিমত। তাঁরা বলছেন, ইভিপি-র অনুষ্ঠানের সূচনালগ্নেও মানুষ নিজেদের বক্তব্য কমিশনের ফেসবুকে জানানোর সুযোগ পেয়েই ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এটা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের উপরে অনাস্থার বড় প্রমাণ! রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অন্য একটি অংশের বক্তব্য, এটাকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই। কারণ, ফেসবুক লাইভে ভোটারদের কত জনই বা মন্তব্য করেছেন!
যুক্তি, পাল্টা যুক্তি আছেই। কিন্তু ইভিএম প্রশ্নহীন হতে পারছে না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy