ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ বিরোধীদের। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির হিংসার জেরে আজ তপ্ত হয়ে উঠল লোকসভা। ধাক্কাধাক্কি এবং উত্তেজনা ছড়াল ট্রেজারি বেঞ্চের সামনে। লোকসভা কক্ষে প্রহৃত হওয়ার অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস সাংসদ রামাইয়া হরিদাস। তাঁর বক্তব্য, দলিত বলেই তাঁর উপর আক্রমণ করা হয়েছে। স্লোগান লেখা কাগজ কুচিকুচি করে ছিঁড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্পিকারের টেবিলে। ‘কুরুক্ষেত্র’ সামলাতে দফায় দফায় মুলতুবি হল অধিবেশন। অবশেষে বিকেল সাড়ে চারটেয় স্পিকার ওম বিড়লা জানালেন, আজকের ঘটনার জন্য তিনি ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ আহত। সংসদের গরিমা এবং ঐতিহ্যের অবমাননা ঘটেছে। কী ভাবে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, সাংসদেরা কথা বলে স্থির করুন। সব ঠিক থাকলে মঙ্গলবার ফের অধিবেশন চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিহারের জেডিইউ সাংসদ বেদপ্রকাশ মাহাতোর মৃত্যুতে আজ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম দিনের লোকসভা গোড়াতেই মুলতুবি হয়ে যায়। দুপুর দু’টোয় অধিবেশন ফের চালু হতে দেখা গেল ভাল রকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন কংগ্রেস সদস্যেরা। ‘শাহ-এর পদত্যাগ চাই’ লেখা বিশাল মাপের কালো ব্যানার (এত বড় ব্যানার একবারেই দেখা যায় না অধিবেশন কক্ষের ভিতরে), সঙ্গে বিভিন্ন আকার-আকৃতির কাগজের পোস্টারে কংগ্রেস তথা বিরোধী বেঞ্চ ছয়লাপ। ওয়েলকে ঘিরে রেখে
ক্রমশ উচ্চগ্রামে চড়ে মোদী-শাহ বিরোধী স্লোগান। পাল্টা চাঞ্চল্য শুরু হয় সরকার পক্ষেও। বিজেপির সদস্যরা স্লোগান দিতে থাকেন— ‘মহাত্মা গাঁধী অমর রহে, নকলি গাঁধী জেল মে রহে।’
তিনটে নাগাদ উত্তেজনা চরমে ওঠে যখন বিজেপির সাংসদ সঞ্জয় জায়সবাল ‘ডাইরেক্ট ট্যাক্স— বিবাদ সে বিশ্বাস’ সংশোধনী বিল নিয়ে বলতে বলতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তোলেন। দেখা যায় কংগ্রেসের গৌরব গগৈ এবং রভনীত সিংহ বিট্টু বিশাল কালো ব্যানারটি নিয়ে কার্যত ধেয়ে আসেন ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে। চতুর্থ সারিতে দাঁড়িয়ে বলছিলেন সঞ্জয়। তাঁর সামনে গিয়ে ব্যানার দেখিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন কংগ্রেস সদস্যরা। ওই দুই সাংসদের পিছনে অন্য কংগ্রেস সাংসদেরাও আসতে শুরু করেন। নিজেদের আসন থেকে দৌড়ে আসেন বিজেপি সাংসদেরাও। শুরু হয় প্রবল ধাক্কাধাক্কি। দৌড়ে এসে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী। অন্য দিকে বিজেপির মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং রবিশঙ্কর প্রসাদকেও দেখা যায় উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা করতে। তৃণমূল সাংসদেরাও নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে এক নাগাড়ে সরকার-বিরোধী স্লোগান দিয়ে যেতে থাকেন। একাধিক বার মুলতুবি হয় অধিবেশন।
এরই মধ্যে কংগ্রেস সাংসদ রামাইয়া উত্তেজিত ভাবে বলতে থাকেন তাঁর কাঁধে আঘাত করা হয়েছে। তাঁকে হাত ধরে স্পিকারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে পিছনে পিছনে বিজেপির মহিলা সাংসদেরাও দৌড়ন স্পিকারের ঘরে। যে চিঠিটি রামাইয়া লেখেন তার বক্তব্য, বিজেপি সাংসদ জসকৌর মিনা তাঁর কাঁধে আঘাত করেছেন। তিনি দলিত এবং মহিলা বলে তাঁর উপর এই আক্রমণ বলে রামাইয়ার অভিযোগ। জবাবে মিনাও স্পিকারকে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে রামাইয়ার হাতের ব্যানারটি খোলার সময় তাঁর মাথায় লাগে। রামাইয়াকে তিনি সরে যেতে বললেও কোনও ভাবেই আঘাত করেননি বা ধাক্কা দেননি। মিনার কথায়, ‘‘উনি যদি দলিত শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন, আমিও দলিত মহিলা।’’ পরে স্পিকারের ঘরে বিষয়টির মীমাংসার জন্য সব পক্ষই যায়। সেখানে দু’জনে দু’জনের অভিযোগ জানান। স্পিকার বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কংগ্রেস সাংসদেরা যখন ট্রেজারি বেঞ্চের পাশে বিজেপি সাংসদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছেন, নিজের আসনে স্থির হয়ে বসে গোটা সময়টাই প্রায় মোবাইল ঘেঁটে গিয়েছেন রাহুল গাঁধী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy