Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National News

৩ দিন ধরে সংঘর্ষের পরে অবশেষে মোদীর টুইট, প্রশ্ন ডোভালে

দিল্লিতে কুড়ির বেশি প্রাণ চলে যাওয়ার পরে প্রথম টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪২
Share: Save:

বেনজির সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধছেন সনিয়া গাঁধী। রাজধানী দিল্লিতে তিন দিন ধরে সংঘর্ষের পরেও নরেন্দ্র মোদী নীরব। তা-ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের সময়। সনিয়া বলছেন, ‘‘নীরবতা ‘শকিং’। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারে আমি ছিলাম বিরোধী নেত্রী। কাশ্মীর থেকে দেশের যে-কোনও প্রান্তে সঙ্কট হলে তিনি নিজে বৈঠক করতেন। দুর্ভাগ্য, মোদী সরকার আসার পরে এমন বৈঠক হয়নি। গত কাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু দিল্লির প্রতিনিধিদের ডেকেছেন, সব দলের নয়।’’

সনিয়ার এই মন্তব্যের আধ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম টুইট। তিন দিন পরে, কুড়ির বেশি প্রাণ চলে যাওয়ার পরে। মোদী লিখলেন, ‘দিল্লির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছি। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে, শান্তি ফেরাতে পুলিশ এবং অন্য সংস্থা কাজ করছে। শান্তি ও সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির মূল কথা। দিল্লির বোন ও ভাইদের প্রতি অনুরোধ, সব সময়ে শান্তি এবং সৌভ্রাত্র বজায় রাখুন। দিল্লিতে দ্রুত শান্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসাটা জরুরি।’

কাল রাত থেকে দিল্লির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দিল্লির এক পুলিশ অফিসারের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। আজ সকালে সরকারের অদৃশ্য ‘সূত্র’ জানাল, দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্ব পেয়েছেন ডোভাল। ‘পরিস্থিতি’ সরেজমিনে ঘুরে তিনিই জানাবেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর চোখ দিয়েই ‘পরিস্থিতি খতিয়ে’ দেখেছেন মোদী। সরকারি ‘সূত্র’ এমন এক ভাব করল, যেন দিল্লির হিংসা নিয়ে মোদীর কোনও দায়িত্ব নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তা রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন। সে কারণেই ডোভালের মাধ্যমে রাশ ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সনিয়ার খোঁচার পর টুইটে সেটিই জানালেন।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে হত ২৭, চলল অ্যাসিড হামলাও

প্রশ্ন উঠল, তা হলে কি মোদী ও শাহের মধ্যে চিড় ধরল? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বে আসলে কে তা হলে? দিল্লির আইন-শৃঙ্খলার ভার কী অমিতের বদলে ডোভালের হাতে?

কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও বললেন, ‘‘ডোভালকে পাঠিয়ে শাহের উপর অনাস্থা দেখালেন প্রধানমন্ত্রী। কেন তাঁকে বরখাস্ত করছেন না?’’ প্রশ্ন ছড়াতেই ক্ষত মেরামতে নামল সরকার। মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বললেন, ‘‘কোনও বিভ্রান্তি নেই। আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিজের জায়গাতেই আছেন।’’ পথে পথে ঘুরে ডোভালও বললেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই আমাকে পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করছি মাত্র।’’ এ যুক্তিকে আরও জোরালো করতে দিল্লি চষে ডোভাল সোজা নর্থ ব্লকে গেলেন অমিতের সঙ্গে দেখা করতে।

তা হলে কি সত্যিই চিড় ধরল মোদী-শাহে? সেটি ঢাকতেই এত চেষ্টা! বিজেপির এক নেতার মন্তব্য, ‘‘সে গুড়ে বালি। ট্রাম্পের সফরের সময়ে এত কাণ্ড হচ্ছে রাজধানীতে, প্রধানমন্ত্রী চাইলে নিজে পদক্ষেপ করতেন না? আজ টুইট করেছেন, দলের নেতা কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে একটি শব্দ বলেছেন? ডোভালও তেমন কোনও কথা বলেছেন?’’

কংগ্রেস নেতারা ছবি দেখাচ্ছেন, কাল রাতে ডোভালের কনভয়ের সঙ্গে লাঠি হাতে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি তুলে বাইক বাহিনী গিয়েছে। মোদী বরাবরই ঘটনার অনেক পরে মুখ খোলেন। সে আকলাখ খুনের ঘটনা হোক বা উনায় দলিত-নিগ্রহ, কিংবা গত বছর পুলওয়ামার পরে দেশজুড়ে কাশ্মীরি-বয়কট ঘোষণা। জল অনেকটা গড়ালে তবেই মুখ খোলেন মোদী। আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলছেন, ‘‘দিল্লির ঘটনা নরসংহার। ২০০২ সালের গুজরাত মনে করাচ্ছে।’’

২০০২ আর ২০২০। দুটি শূন্য, দুটি দুই— অদ্ভূত মিল খুঁজে পাচ্ছেন কিন্তু বিরোধীদের অনেকেই!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy