ছবি পিটিআই।
পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া তথা পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে দিল্লির হিংসায় আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করল ইডি। বিতর্কিত মুসলিম সংগঠনটির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাহির হুসেন সংঘর্ষে মদত দিয়েছেন— এই মর্মে দায়ের হয়েছে আরও একটি অভিযোগ। আগেই এই আপ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ বাধানো আইবি-কর্মী অঙ্কিত শর্মাকে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। কিন্তু হিংসায় উস্কানি দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করছে না অমিত শাহের পুলিশ? কপিল প্রসঙ্গ এড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ লোকসভায় আশ্বাস দেন, ‘‘কারও বক্তৃতার তিরিশ দিন পরেও যদি সংঘর্ষ যদি হয়ে থাকে, তবু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
লোকসভায় এ দিন কপিলকে আড়াল করতে বিশেষ তৎপর ছিলেন বিজেপির মীনাক্ষী লেখি, তেজস্বী সূর্যরা। লক্ষ্য ছিল মুসলিমদের উপরে দিল্লি-হিংসার পুরো দায় চাপানো। তাঁরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন মূলত কংগ্রেস ও কট্টরপন্থী ইসলামি নেতাদের কারণেই সংঘর্ষ হয়েছে। মীনাক্ষী বলেন, ‘‘গোয়েন্দা কর্মী অঙ্কিতের দেহে ৪০০টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। অন্ত্র শরীর থেকে বার করে নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের হামলা আগে দেখা যায়নি। কট্টরপন্থীদের ঘৃণার শিকার হয়েছেন ওই ব্যক্তি।’’ এর সঙ্গে মীনাক্ষীর প্রশ্ন, ‘‘শরজিল ইমাম, আমানতুল্লা খান, উমর খালিদ বা ওয়ারিস পঠানরা যে ভাবে ঘৃণা ছড়িয়েছে, তার জন্য কি কপিল মিশ্র দায়ী? কংগ্রেস যে উস্কানি দিয়েছে তার জন্য কি কপিল মিশ্র দায়ী?’’ এমআইএমের আসাদুদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ আনেন, ‘‘সরকার এক পক্ষকেই নিশানা করছে। তাদের বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’
জবাবে শাহের দাবি, ‘‘নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে।’’ শাসক শিবির সংসদের বিতর্কে বোঝাতে চেয়েছে, হিংসা যেখানে ছড়িয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির ওই এলাকা বরাবরই কট্টরপন্থীদের ঘাঁটি। অতীতে সীলমপুরের মতো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় আইএস মডিউলের হদিস মিলেছিল। উদ্ধার হয় বিস্ফোরক-অস্ত্র। মীনাক্ষীর কথায়, ‘‘এ বারেও প্রস্তুতি নিয়েছিেলন তাহির। তাঁর বাড়ি থেকে অস্ত্র, লোহার টুকরো ছোড়ার জন্য বিশেষ গুলতি পাওয়া গিয়েছে। প্রতি দশটি বাড়ি অন্তর এমন গুলতি উদ্ধার হয়েছে। কেন?’’ মীনাক্ষী উল্লেখ করেন, ‘‘মুস্তাফাবাদে ফয়জ়ল ফারুখের স্কুল অক্ষত। কিন্তু পাশেই অরুণ মডার্ন পাবলিক স্কুল পুড়েছে।’’
মুসলিম মহিলাদেরও ভূমিকা ছিল হিংসায়— মীনাক্ষী এই অভিযোগ করতেই প্রবল আপত্তি জানান বিরোধীরা। বিএসপি-র দানেশ আলির আবেদনে ওই মন্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ যায়। বিতর্কে ধর্ম বা জাতের উল্লেখ করতে নিষেধ করেছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। শাসক শিবির তাই নাম বলতে থাকেন অভিযুক্তদের। যাতে ধর্মীয় পরিচয় বোঝানো যায়। মীনাক্ষীর বক্তব্যের শেষে তৃণমূলের সৌগত রায় লোকসভায় বলেন, ‘‘বাইরে বললে এই বক্তব্য হেট স্পিচ হিসাবে গণ্য হত। কপিল মিশ্রের হয়ে সওয়াল দেখে মনে হচ্ছে, আপনি ডেভিল’স অ্যাডভোকেট!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy