Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Delhi Violence

শিখ-মুসলিম বিবাদ মেটাল দিল্লির হিংসা

সাহরনপুর রেল স্টেশনের অদূরে একটি গুরুদ্বার সংলগ্ন জমি নিয়ে বিবাদ। গুরুদ্বারটি বড় করার জন্য জমি কিনে গুরুদ্বার কমিটি পুরনো ইমারতগুলি ভেঙে ফেলে।

হিংসার আগুনে পুড়ে ছাই। ছবি: পিটিআই।

হিংসার আগুনে পুড়ে ছাই। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
সহারনপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০১:২২
Share: Save:

দিল্লির গোষ্ঠী হিংসা মেটাল শিখ ও মুসলিমদের দীর্ঘ দশ বছরের জমি-বিবাদ।

উত্তরপ্রদেশের সাহরনপুরের কুতুবশের এলাকার একটি জমি নিয়ে সংঘর্ষের জেরে ২০১৪ সালে প্রাণ হারিয়েছিলেন তিন জন। ৩৩ জন আহত হন। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। বাড়তে থাকে শত্রুতাও। কিন্তু সেই বৈরী সম্পর্কের ইতি টানল উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসার খবর। কুতুবশের এলাকার বাসিন্দারা জানতে পারেন রাজধানীতে মৌজপুর, চাঁদ বাগ, জ়াফরাবাদের মতো এলাকায় গৃহহীন মুসলিম পড়শিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেখানকার শিখরা। সেই কৃতজ্ঞতায় নিজেদের বিবাদ মিটিয়ে নেন কুতুবশেখের মহরম আলি, নিজ়াম পাশারা।

সাহরনপুর রেল স্টেশনের অদূরে একটি গুরুদ্বার সংলগ্ন জমি নিয়ে বিবাদ। গুরুদ্বারটি বড় করার জন্য জমি কিনে গুরুদ্বার কমিটি পুরনো ইমারতগুলি ভেঙে ফেলে। অভিযোগ, এর মধ্যে ছিল একটি প্রাচীন মসজিদও। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে সাহরনপুরে। বিবাদ গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। এ বার যাতে ইতি টানছে দু’পক্ষ। জমির দাবি ছাড়ছেন মুসলিমরা। বদলে অন্য জায়গায় তৈরি হবে মসজিদ। যার জন্য অর্থসাহায্য করবে গুরুদ্বার কমিটি।

সুপ্রিম কোর্টে মুসলিম পক্ষের প্রতিনিধি নিজ়াম পাশা বলেছেন, ‘‘দিল্লি হিংসার পরে শিখরা যে ভাবে মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রতিবাদে আগাগোড়া যে ভাবে পাশে থেকেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে আমরা জমির দাবি ছেড়ে দিচ্ছি।’’ মুসলিম পক্ষের আইনজীবী মহরম আলির কথায়, ‘‘শিখরা মানবতার জন্য কাজ করেছেন। তাঁরা অসহায় মানুষকে সাহায্য করেছেন। আর বিদ্বেষ জিইয়ে রাখতে চাই না।’’

এই সপ্তাহের গোড়ায় নতুন গুরুদ্বার তৈরির জন্য করসেবায় অংশগ্রহণ করেছেন মহরম আলি ও বহু স্থানীয় মুসলিম। শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সানি বলেন, ‘‘মুসলিমরা যে গুরুদ্বারে করসেবায় যোগ দিয়েছেন তাতে আমরা খুশি। ২০১০ সাল থেকে যে সংঘাত চলছিল তা নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতি নষ্ট হোক আর চাই না।’’ সানি ও স্থানীয় শিখরাও এখন হাত লাগিয়েছেন মসজিদ প্রতিষ্ঠায়। গুরুদ্বারের এক কিলোমিটারের মধ্যে মসজিদের জন্য জমির ব্যবস্থা করেছেন মহরম। দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জেলা প্রশাসনও।

শুধু সহারানপুরেই নয়, সম্প্রীতির ছবিও চেনাচ্ছে দিল্লিও। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, অশোক নগরের যে মসজিদে তাণ্ডব চালিয়ে পতাকা ওড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে, সেখান থেকে পতাকা খুলে নিচ্ছেন রবি নামে এক তরুণ। যদিও এই ভিডিয়োটি ভুয়ো কি না যাচাই করা সম্ভব হয়নি। হিংসার সপ্তাহ পার হওয়ার পরে এখন ঘরে ফেরার কথাও ভাবছেন আক্রান্তদের অনেকে। চাঁদ বাগে মহম্মদ জ়ুবেরকে মাটিতে ফেলে ঘিরে ধরে মেরেছিল এক দল হামলাকারী। দু’হাত বুকের কাছে জড়ো করে অসহায়ের মতো মাটিতে পড়ে রয়েছেন রক্তাক্ত ওই তরুণ। তাঁকে ঘিরে লাঠি উঁচিয়ে উন্মত্ত জনতা। দিল্লি হিংসার মুখ জ়ুবেরের এই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। তিনিই এখন বলছেন, ‘‘আমার দাড়ি, টুপি দেখে ওরা মেরেছিল। কিন্তু চাঁদ বাগেই ফিরতে চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Violence Saharanpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy