শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনের তদন্তে এ বার মুম্বইয়ে গিয়ে তাঁর বন্ধু লক্ষ্মণ নাদারের বয়ান রেকর্ড করল দিল্লি পুলিশ। শুক্রবার মুম্বইয়ের কাছে বসইয়ের একটি থানায় লক্ষ্ণণকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর বক্তব্য শোনেন তদন্তকারীরা। ঘণ্টা তিনেক ধরে নানা প্রশ্নের জবাবও বয়ান হিসাবে নথিভুক্ত করেন তাঁরা।
লক্ষ্মণের বয়ান রেকর্ড করা ছাড়া শ্রদ্ধার মা-বাবার বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে বসইয়ের যে এলাকায় শ্রদ্ধা তাঁর মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন, সেখানকার বন্ধুবান্ধব এবং পাড়াপ্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগে ১২ নভেম্বর তাঁর প্রেমিক তথা লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। আদতে মুম্বইয়ের বসইয়ের বাসিন্দা হলেও সেখানকার পাট চুকিয়ে দিল্লির মেহরৌলীতে ছতরপুর পাহাড়ি এলাকায় একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেছিলেন শ্রদ্ধা এবং আফতাব। অভিযোগ, ১৮ মে সন্ধ্যায় শ্বাসরোধ করে শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব। এর পর দিন দুয়েকের বেশি সময় ধরে শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করেন তিনি। মাস তিনেক ধরে একটি বড়সড় ফ্রিজ়ে ওই টুকরোগুলি রেখে দিয়েছিলেন। এর পর রাতের অন্ধকারে এক-একটি টুকরো প্যাকেটে মুড়ে দিল্লির ছতরপুরের জঙ্গলে ফেলতে যেতেন তিনি। ১৮ দিন ধরে আফতাব এ কাজ করেছিলেন বলে দাবি তাঁর। এই হত্যাকাণ্ডে আফতাবের স্বীকারোক্তি পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। তদন্তে নেমে এ বার মেহরৌলী থানার দু’জন আধিকারিকের একটি দল মুম্বইয়ে পৌঁছেছে। শুক্রবার মানিকপুর থানায় লক্ষ্মণকে তলব করেন ওই তদন্তকারীরা। যদিও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি লক্ষ্মণ।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রদ্ধার মোবাইল যে মাস দুয়েক ধরে সুইচড অফ, গত সেপ্টেম্বরে লক্ষ্মণই প্রথম দাবি করেন। শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়ালকরকে সে কথা জানিয়েছিলেন তিনি। বসইয়ের বাসিন্দা বিকাশ এর পর এলাকার মানিকপুর থানায় গিয়ে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন। তাঁর অভিযোগের তদন্তে নেমে অক্টোবরে আফতাবকে মানিকপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। অক্টোবর বার দুয়েক জিজ্ঞাবাদের পর আফতাবকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
মহারাষ্ট্র পুলিশের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা এ বার বিকাশের বসইয়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালাবে। ২০১৪ সালে মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদের আগে পর্যন্ত ওই বাড়িতেই ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন শ্রদ্ধা। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্তকারী দলটি শ্রদ্ধার পুরনো বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশীদেরও বয়ান রেকর্ড করবে। এ ছাড়া, দিল্লিতে যাওয়ার আগে যে ৩টি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন শ্রদ্ধা এবং আফতাব, সেখানকার মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা।’’