Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
BJP

দিল্লির পুরভোট আজ, কঠিন লড়াইয়ে পদ্ম

গত পনেরো বছর ধরে দিল্লির পুর নিগমে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এই দেড় দশকে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল  দু’বার দিল্লির মসনদে বসলেও, পুরনিগম ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজেপিই।

দিল্লি পুর নিগমের ভোটের প্রচারে বিজেপির গৌতম গম্ভীর এবং শিবরাজ সিংহ চৌহান।

দিল্লি পুর নিগমের ভোটের প্রচারে বিজেপির গৌতম গম্ভীর এবং শিবরাজ সিংহ চৌহান। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৮
Share: Save:

টানা চতুর্থ বার ক্ষমতা দখল, না কি বিজেপির দুর্গ ভেঙে এ বার দিল্লি পুর নিগমে প্রথম বার ক্ষমতা পাবে আম আদমি পার্টি (আপ), তারই নির্ণায়ক যুদ্ধ আগামিকাল। খাতায়-কলমে লড়াইয়ে রয়েছে কংগ্রেসও। কিন্তু তারা যে তৃতীয় স্থানে, সেই দেওয়াল লিখন অনেকাংশেই স্পষ্ট।

গত পনেরো বছর ধরে দিল্লির পুর নিগমে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এই দেড় দশকে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল দু’বার দিল্লির মসনদে বসলেও, পুরনিগম ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজেপিই। কিন্তু এ বারের লড়াই কিছুটা আলাদা। প্রায় দু’দশক পরে ফের দিল্লির তিনটি পুর নিগম জুড়ে গিয়েছে। আপ শিবিরের অভিযোগ, পুর নিগম হাতছাড়া হওয়ার ভয়েই পুর ভোট পিছিয়ে দিয়ে তিনটি পুর নিগম সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রের মোদী সরকার।

অন্য দিকে বিজেপির দাবি, পুরনিগম যাতে আরও মসৃণ ও সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারে, তাই তিনটি পুর নিগম মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের ফলে তিনটি পুর নিগমে আসনের যে পুনর্বিন্যাস হয়েছে, তাতে আগেকার ২৭২টির জায়গায় আসন কমে দাঁড়িয়েছে ২৫০টিতে। যাতে মোট প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন ১৩৪৯ জন। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন ৪০ হাজার পুলিশ কর্মী, ২০ হাজার হোমগার্ড ও ১৮ কোম্পানি আধা সেনা।

প্রাথমিক ভাবে জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী অধিকাংশ আসনেই এগিয়ে রয়েছে আম আদমি পার্টি। যার ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হচ্ছে, ক্ষমতায় আসার পরে আট বছর কেটে গেলেও মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা এখনও সম্ভবত অরবিন্দ কেজরীওয়ালের পিছনে রয়েছেন। বিজেপি আর্থিক ভাবে উচ্চবিত্ত ও উচ্চবর্ণের ভোটকেই শুধু নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া, সরকারি স্কুল ও স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করার মতো সিদ্ধান্ত কেজরীর ভোট ব্যাঙ্ককে ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির অধিকাংশ মানুষই কেজরীওয়ালের দলকে পুর নিগমের দায়িত্বে দেখতে চাইছেন। কারণ গত আট বছরে দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুর নিগমের মধ্যে সংঘাতে, বিশেষ করে অর্থ বরাদ্দকে ঘিরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিল্লির সাফাই সংক্রান্ত কাজকর্ম।

আজ দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘দেড় দশকে দিল্লি আবর্জনার পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এলে দিল্লিকে স্বচ্ছ বানানোই হবে প্রধান লক্ষ্য।’’ কার্যত বিজেপির ধাঁচেই দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুরনিগমে আপের ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের পক্ষে সওয়াল করেছেন আপ নেতারা।

অন্য দিকে ধর্মীয় জনভিত্তি অনুযায়ী মুসলমান সমাজ গোড়া থেকেই আপের পিছনে রয়েছে। এ বারের ভোটেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করছেন আপ নেতৃত্ব। মুসলিমদের পাশাপাশি দলিত ও ওবিসি ভোটনিজেদের দিকে টানার ব্যাপারে আশাবাদী কেজরীওয়াল, যা চিন্তা বাড়িয়েছে বিজেপি শিবিরের। মহিলাদের জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, মহিলাদের বিনামূল্যে সরকারি বাসে যাতায়াতের সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্তও দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে যাবে বলেই মনে করছেন আপ নেতারা।

অন্য দিকে বিজেপি হাতিয়ার করতে চাইছে দুর্নীতিকে। দুর্নীতির অভিযোগে আপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের তিহাড় জেলে বন্দি থাকা, জেলে অবৈধ ভাবে সুবিধা নেওয়ার একের পর এক ভিডিয়ো সামনে আসা, উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ দিল্লিবাসী ভাল ভাবে নেয়নি বলেই দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেন, ‘‘স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবগারি, পরিবহণ, এমনকি ঠিকা শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে দুর্নীতির একটি নতুন মডেল খাড়া করেছে কেজরীওয়াল সরকার। মানুষ পুর নিগমের ভোটে এর বদলা নেবেন।’’

মুখে এ কথা বললেও এ বার পুর নিগম ধরে রাখা যে শক্ত, বিজেপি নেতারা তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন। তবে দল আশা করছে, ২৫০ কেন্দ্রে লড়াই করা কংগ্রেস যদি বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাঙাতে সক্ষম হয়, সে ক্ষেত্রে আপ ও কংগ্রেসের ভোট ভাগাভাগির সুযোগে বাজিমাত করার সুযোগ থাকবে বিজেপির জন্য।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP AAP Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy