Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Delhi IAS Coaching Centre

দিল্লির বেসমেন্টকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট, পুরসভা ও পুলিশের কাজে অসন্তোষ

দিল্লির বেসমেন্টকাণ্ডের গুরুত্ব বিবেচনা করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে এর সঙ্গে সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতির যোগ থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত।

দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের সেই কোচিং সেন্টার।

দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের সেই কোচিং সেন্টার। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ১৬:৪৬
Share: Save:

দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। দিল্লির উচ্চ আদালত জানিয়েছে, ঘটনার প্রকৃতি বিবেচনা করে এবং তদন্ত নিয়ে যাতে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ না থাকে, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তের ভার দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই মামলায় পুলিশ এবং দিল্লি পুরসভার ভূমিকার সমালোচনাও করেছে আদালত।

দিল্লি হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি তুষার রাও গেডেলার বেঞ্চে বেসমেন্ট মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার। আদালতের মন্তব্য, ‘‘এই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে হাই কোর্ট। ঘটনার সঙ্গে সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতির যোগ থাকতে পারে।’’ সিবিআইয়ের তদন্তের তদারকি করার জন্য সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনকে এক আধিকারিকের মনোনয়নের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

শুনানি চলাকালীন দিল্লি পুরসভার গাফিলতির প্রসঙ্গ ওঠে। পুর কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে আদালত। সেই সঙ্গে কোচিং সেন্টারের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চালককে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে পুলিশকেও ভর্ৎসনা করা হয়। কেন ওই এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক ছিল না, কী ভাবে এত জল জমল, কেনই বা প্রশাসনের চোখের সামনে অনুমতি ছাড়া বেআইনি ভাবে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে লাইব্রেরি চালানো হচ্ছিল, সে সব প্রশ্ন করেন বিচারপতি। গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে পুলিশ যে পদক্ষেপ করেছিল, তা ‘অনুচিত’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করতে গিয়ে বিচারপতি তদন্তকারী আধিকারিকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যে ভাবে আপনারা গাড়ির চালককে গাড়ি চালানোর অপরাধে গ্রেফতার করেছিলেন, তাতে আপনারা যে বেসমেন্টে ঢুকে পড়ার অপরাধে জলের কাছ থেকে জরিমানা চেয়ে বসেননি, সেটাই স্বস্তির।’’ উল্লেখ্য, ধৃত চালক নিম্ন আদালত থেকে বৃহস্পতিবারই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের ডিসিপি সেন্ট্রাল জানিয়েছিলেন, ওই ব্যক্তিকে জমা জলের উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে দেখা গিয়েছিল। সেই জলের ধাক্কাতেই বেসমেন্টের দরজাটি ভেঙে যায় এবং জল ঢুকে তিন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। প্রথমে নিম্ন আদালত মনুজ খাটুরিয়া নামের ওই চালকের জামিন খারিজ করে দিয়েছিল। তাঁকেও বাকিদের সঙ্গে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। পরে অন্য আদালত থেকে জামিন পান চালক।

দিল্লি পুরসভাকেও ভর্ৎসনা করে আদালত। ওই এলাকায় উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা ছিল না এবং তার জন্য পুরসভা কোনও পদক্ষেপও করেনি বলে অভিযোগ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাস্তায় জল জমে থাকা সাধারণ ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। এই সমস্যাকে গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না পুরসভার তরফে। সেই গাফিলতিরই ফল রাজেন্দ্রনগরের ঘটনা।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই রাজেন্দ্রনগরের একটি কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে আচমকা বৃষ্টির জল ঢুকে যায়। বেসমেন্টের লাইব্রেরিতে পড়ুয়ারা ছিলেন। জল ঢুকতে দেখে অনেকেই দ্রুত উপরে উঠে আসেন। কিন্তু তিন পড়ুয়া বেরিয়ে আসার সময় পাননি। জলে ডুবে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা হলেন তানিয়া সোনি, শ্রেয়া যাদব এবং নবীন ডেভলিন। তিন জনেই আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বেসমেন্টে লাইব্রেরি চালানো হচ্ছিল। ওই বেসমেন্ট কেবল গাড়ি পার্কিং এবং গুদামঘর হিসাবে ব্যবহারের ছাড়পত্র ছিল। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কোচিং সেন্টারের মালিক, কো-অর্ডিনেটর এবং বেসমেন্টের একাধিক মালিক রয়েছেন। এ ছাড়াও ঘটনার দিন কোচিং সেন্টারের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy