বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করতে বলে দিল্লি হাই কোর্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এক বিবাহিতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন যুবক। মহিলার স্বামীকে বলেছিলেন তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদ করে নিলে তিনি প্রেমিকাকে বিয়ে করবেন। কিন্তু প্রেমিকার বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর ঠিক তার উল্টো ঘটনা ঘটল। প্রেমিকাকে আর বিয়েই করতে চান না যুবক। একে ‘বিয়ের দ্বৈত প্রতিশ্রুতিভঙ্গ’ বলে অভিহিত করে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিল দিল্লি হাই কোর্ট।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের একটি মামলা উঠেছিল দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মার এজলাসে। মামলায় বলা হয়, প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন এক যুগল। কিন্তু তাঁদের প্রেম পরিণতি পায়নি। ২০১১ সালে দু’জনেরই অন্যত্র বিয়ে হয়। কিন্তু ওই দু’জনের কারও বৈবাহিক জীবন সুখের হয়নি। যুবকের বিচ্ছেদ হয়। তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকাও স্বামীর সঙ্গে পৃথক থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে আবার সমাজমাধ্যমে ওই প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকার যোগাযোগ হয়। তাঁরা এক সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তত দিনে মহিলার সন্তান হয়েছে। এর মধ্যে প্রেমিকার স্বামীর কাছে যান যুবক। জানান, তিনি বিয়ে করতে চান প্রেমিকাকে। তবে প্রেমিকা জানিয়েছেন, আইনি বিচ্ছেদ হয়ে গেলেই সেটা সম্ভব। ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমিকার তৎকালীন স্বামীর দীর্ঘ কথাবার্তা হয়। পরে ওই দু’জনের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু এর পর আর প্রেমিকাকে ওই যুবক বিয়ে করতে চাননি বলে অভিযোগ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ করে আইনের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা।
নিম্ন আদালত যুবককে অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি দেয়। বিচারক জানান, দুই প্রাপ্তবয়স্ক নিজেদের ইচ্ছায় সহবাস করেছেন। শারীরিক সম্পর্কের জন্য কেউ কারও উপর জোর খাটাননি। একে ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতিভঙ্গ’ না বলে ‘বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ বলে ব্যাখ্যা করে আদালত। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান ওই মহিলা। বিচারপতি সূর্যকান্ত একে ‘পিকিউলিয়ার স্টোরি’ (বিচিত্র ঘটনা) বলে মন্তব্য করেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এখানে দু’জনেই বিবাহিত ছিলেন। দু’জনেই পরস্পরকে বিয়ে করবেন বলে তাঁদের সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ করে নেন। কিন্তু তার পর তাঁরা বিয়ে করলেন না!
মহিলার অভিযোগ, অভিযুক্তকে বিয়ে করবেন বলে তিনি প্রস্তুতি নিয়ে নেন। এমনকি, মঙ্গলসূত্র বানিয়ে ফেলেন। তার টাকা দেন অভিযুক্তই। তার পর আচমকা সিদ্ধান্ত বদল করেন প্রেমিক। এমনকি, তাঁকে বিয়ে করতে বলায় প্রাণনাশের হুমকি দেন। দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘এখানে অভিযোগকারিণী এবং তাঁর স্বামীকে অভিযুক্ত বলেছিলেন যে, তিনি বিয়ে করবেন। এই প্রতিশ্রুতি না দিলে অভিযোগকারিণী হয়তো অভিযুক্তের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন না।’’ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy