Delhi Election Results 2020: Arvind Kejriwal’s AAP Sweeps The Election Again dgtl
Delhi Assembly Election 2020
‘বিপশ্যনা’য় বিশ্বাসী মাফলারম্যানের হাত ধরেই রাজধানীতে আবার ‘পহলে আপ’
পরবর্তীকালে অরবিন্দও বাবার পথেই পা রাখেন। ১৯৮৫ সালে আইআইটি-জেইই প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলে মেধাতালিকায় তাঁর স্থান ছিল ৫৬৩ নম্বরে। আইআইটি খড়্গপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে ১৯৮৯ সালে অরবিন্দ কেজরীবালের প্রথম চাকরি ছিল টাটা স্টিল-এ। কর্মস্থল, জামশেদপুর।
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৩:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
গলাবন্ধ কোট আর ধুতির ‘কমনম্যান’ রেখায় এসেছিলেন আধ শতকেরও বেশি আগে। রাজনীতির ময়দানেও কমনম্যানের জাদু নিয়ে এলেন তিনি। শিক্ষিত মধ্যবিত্তের পরিশীলিত ভাবমূর্তির সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন আটপৌরে ঝাঁটাকেও! আমজনতার প্রতীক হয়েই ভারতীয় রাজনীতির ময়দানে অন্য হাওয়া বয়ে গেল অরবিন্দ কেজরীবালের হাত ধরে। রাজধানীতে আরও একবার ‘পহলে আপ’!
০২১৪
হরিয়ানার ভিবানীতে কেজরীবালের জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৬ অগস্ট। গোবিন্দরাম এবং গীতাদেবীর প্রথম সন্তান তিনি। দুই ভাইয়ের সঙ্গে অরবিন্দের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সোনিপথ, হিসার এবং গাজিয়াবাদ-সহ বেশ কিছু শহরে। হিসারের ক্যাম্পাস হাই স্কুল এবং সোনিপথের এক মিশনারি স্কুলে প্রাথমিক পড়াশোনা অরবিন্দের।
০৩১৪
গোবিন্দরাম ছিলেন পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পরবর্তীকালে অরবিন্দও বাবার পথেই পা রাখেন। ১৯৮৫ সালে আইআইটি-জেইই প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলে মেধাতালিকায় তাঁর স্থান ছিল ৫৬৩ নম্বরে। আইআইটি খড়্গপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে ১৯৮৯ সালে অরবিন্দ কেজরীবালের প্রথম চাকরি ছিল টাটা স্টিল-এ। কর্মস্থল, জামশেদপুর।
০৪১৪
সাত বছর পরে তিনি সে চাকরি ছেড়ে দেন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য অনেকদিন ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। স্থির করেন, বদলে ফেলবেন তাঁর কেরিয়ারের গতিপথ। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হন কেজরীবাল। ১৯৯৫ সালে তিনি যোগ দেন ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিস বা আইআরএস-এ।
০৫১৪
তাঁর জীবনের এই পর্ব বিতর্কিত। ২০০০ সালের নভেম্বরে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি দু’বছরের সবেতন ছুটি নিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন আর ফিরবেন না চাকরিতে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তাঁকে ছুটির পর্বের বেতন ফিরিয়ে দিতে হত। সেটা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হওয়ায় ফের চাকরিতে যোগ দেন কেজরবীবাল।
০৬১৪
কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে তাঁকে প্রায় একবছর কাজ করতে হয় কোনও পদমর্যাদা ছাড়াই। দেড় বছর ধরে কাজ ছাড়াই বেতন পাওয়ার পরে কেজরীবাল এ বার দেড় বছরের বেতনহীন ছুটির আবেদন করেন। মঞ্জুর হয় তাঁর আবেদন।
০৭১৪
২০০৬-এর ফেব্রুয়ারিতে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। ভারত সরকারের দাবি ছিল, তিন বছর চাকরি না করে চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন কেজরীবাল। এই বিতর্কে পাল্টা কেজরীবাল বলেন, তাঁর দেড় বছরের কাজ এবং দেড় বছরের বেতনহীন ছুটিতে সেই হিসেব পুষিয়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ ছিল, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সামিল হওয়ার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়।
০৮১৪
২০১১ সালে আপাত-নিষ্পত্তি হয় এই বিতর্কের। অরবিন্দ কেজরীবাল বন্ধুদের থেকে ধার করে ৯ লক্ষেরও বেশি টাকা সরকারকে ফিরিয়ে দেন।
০৯১৪
সমাজসেবার সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল কেজরীবালের কর্মজীবনেই। ১৯৯৯ সালে ইনকাম ট্যাক্সে কাজ করার সময়েই শুরু করেন ‘পরিবর্তন’ আন্দোলন। তাঁর সঙ্গী ছিলেন মণীশ সিসৌদিয়া। পরে দু’জনে মিলে শুরু করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কবীর’।
১০১৪
২০১১ সালে অণ্ণা হজারে এবং কিরণ বেদীর সঙ্গে কেজরীবাল গঠন করেছিলেন সংগঠন ‘ইন্ডিয়া এগেইনস্ট করাপশন’। লোকপাল বিল পাশ হওয়ার দাবিতে অণ্ণা হজারের অনশন কর্মসূচিতেও অন্যতম মুখ ছিলেন কেজরীবাল। ২০১২ সালে ‘আম আদমি পার্টি’ প্রতিষ্ঠা করেন কেজরীবাল।
১১১৪
২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রথমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কেজরীবাল। তবে ৪৯ দিন পরে, ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি ইস্তফা দেন। পরের বছর সেই ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে দ্বিতীয়বার শপথ নেন তিনি। ফের ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আপ-ঝড়ের পরে তৃতীয়বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে কেজরীবাল।
১২১৪
কেজরীবালের কর্মযজ্ঞের অন্যতম কাণ্ডারি তাঁর স্ত্রী, সুনীতা। ১৯৯৩ ব্যাচের আইআরএস আধিকারিক সুনীতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় ১৯৯৫ সালে। তাঁদের মেয়ের নাম হর্ষিতা এবং ছেলের নাম পুলকিত। ২০১৬ সালে কমিশনার অব ইনকাম ট্যাক্স পদ থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন সুনীতা।
১৩১৪
ব্যক্তিগত জীবনে অরবিন্দ কেজরীবাল বহু বছর ধরে বৌদ্ধ দর্শনের ‘বিপশ্যনা’ ( বাংলায় প্রচলিত রূপ বিপাসনা) পন্থায় ধ্যানের গুণগ্রাহী। মধুমেহ রোগী অরবিন্দ কেজরীবাল দীর্ঘদিন ধরে সর্দিকাশির সমস্যায় আক্রান্ত। ২০১৬ সালে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়। দেশবাসীর কাছে তাঁর আর এক পরিচয় ‘মাফলারম্যান’।
১৪১৪
রাইট টু ইনফরমেশন বা তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে ভূমিকার জন্য ২০০৬ সালে অরবিন্দ কেজরীবাল সম্মানিত হন ‘র্যামন ম্যাগসাইসাই’ পুরস্কারে। তাঁর আম আদমি পার্টির হাত ধরেই আরও একবার স্বপ্ন দেখতে চান দিল্লিবাসী।
(ছবি: আর্কাইভ)