ছবি: পিটিআই।
জনতার আদালতে খারিজ হয়ে গেল ‘বিদ্বেষমূলক বিবৃতি’। কড়া অবস্থান নিল আইনের আদালতও।
অনুরাগ ঠাকুর ও প্রবেশ বর্মার বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষমূলক বিবৃতি’-র অভিযোগ নিয়ে পুলিশকে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিল দিল্লি আদালত। দিল্লি ভোটের প্রচারে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্লোগান তুলেছিলেন, ‘দেশ কে গদ্দারো কো, গোলি মারো শালোঁ কো’। বিজেপির দিল্লির সাংসদ প্রবেশ বর্মা শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘এরা ঘরে ঢুকে আপনাদের মেয়ে-বোনকে ধর্ষণ করবে। এখনই এ কথা না-বুঝলে কাল মোদীজি, অমিত শাহ বাঁচাতে আসবেন না।’’
আজ দিল্লির ভোটের ফলাফল জানিয়ে দিয়েছে, রাজধানীর মানুষ এই বিদ্বেষ-মন্তব্যের পক্ষে ভোট দেননি। যে রিঠালা বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ‘গোলি মারো’ স্লোগান তুলেছিলেন অনুরাগ, সেই কেন্দ্রে গোহারা হেরেছে বিজেপি। প্রবেশ পশ্চিম দিল্লির সাংসদ। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের সব কটিতেই হেরেছে বিজেপি। বিকাশপুরীতে প্রচারে গিয়ে তিনি ধর্ষণের কথা তুলে উস্কানি দিয়েছিলেন। সেখানেও বিজেপি হেরেছে। মাদীপুরে প্রচারে প্রবেশ অরবিন্দ কেজরীবালকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেছিলেন। সেখানেও বিজেপি হেরেছে। বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র দিল্লির ভোটকে ‘ভারত বনাম পাকিস্তানের মোকাবিলা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি নিজেই মডেল টাউন থেকে হেরে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আম আদমির নায়ক কেজরীতে মজে দিল্লির জনতা
অনুরাগ ও প্রবেশের বিরুদ্ধে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট মামলা করেছিলেন। আজ দিল্লির অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিশাল পাহুজা দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চকে ১৫ দিনের সময় দিয়েছে তদন্ত শেষ করতে। ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পুলিশকে জানাতে হবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃন্দা দাবি করেছিলেন, সংসদ মার্গ থানাকে অনুরাগ ও প্রবেশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হোক। আজ দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ক্রাইম ব্রাঞ্চের বিশেষ ইউনিট বিষয়টি দেখছে। তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন স্পেশাল কমিশনার (ক্রাইম)।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
শুধু অনুরাগ বা প্রবেশ নন। দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শাহিন বাগকে নিশানা করে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেছেন। আগল ছিল না নিচু তলার অনুরাগ, প্রবেশ থেকে কপিল মিশ্রর মতো নেতাদের মুখেও। যোগী বিকাশপুরীর প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, আপ শাহিন বাগে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছে। সেই কেন্দ্রেও বিজেপি হেরেছে।
তাহাদের কথা
“সীলমপুর, জামিয়া বা শাহিন বাগে সিএএ-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পিছনে দেশ বিভাজনের রাজনীতির ‘ডিজাইন’ রয়েছে।” —নরেন্দ্র মোদী
“জিন্নাওয়ালি আজাদির স্লোগান ওঠে শাহিন বাগে। রাগ নিয়ে এত জোরে ভোটের বোতাম টিপুন, শাহিন বাগে যাতে ‘কারেন্ট’ লাগে।” —অমিত শাহ
“পাকিস্তানের মন্ত্রী কেন কেজরীবালের পক্ষে? কারণ, শাহিন বাগে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।” —যোগী আদিত্যনাথ
“দেশ কে গদ্দারো কো, গোলি মারা শালোঁ কো!” —
অনুরাগ ঠাকুর
আজ ভোটের ফলের পরে অনুরাগ মুখে কুলুপ এঁটেছেন। প্রবেশের হতাশা, ‘‘আমরা দিল্লি সরকারের খামতিগুলো জনতার সামনে তুলে ধরতে পারিনি।’’ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাহেব সিংহ বর্মার ছেলে প্রবেশের নালিশ, ‘‘দিল্লিবাসী মিথ্যা বিজ্ঞাপন ও ফ্রি উপহারের ঢেউয়ে ভেসে গিয়েছেন।’’ শাহিন বাগ নিয়ে তাঁর মন্তব্য কি মানুষ খারিজ করে দিল? তাঁর জবাব, ‘‘আপনারা থাকছেন, আমিও থাকছি। আগামী দিনে এ নিয়ে অনেক চর্চা হবে। আমাদের ভোটের হার, আসন সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু এখন ও সব কথা বলছি না।’’ আর দিল্লির ভোটকে ‘ভারত পাকিস্তান মোকাবিলা’-র তকমা দেওয়া কপিলের আজ খেদোক্তি, ‘‘এই নিয়ে টানা পাঁচটা রাজ্যে বিজেপি বিধানসভা ভোটে হারল। কোথাও আমরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy