Advertisement
E-Paper

সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন খুনে চার জনের যাবজ্জীবন, মৃত্যুদণ্ড কেন নয়, ব্যাখ্যাও দিয়ে দিল দিল্লির আদালত

২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে ফেরার পথে রাত ৩টের সময় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কাছে খুন হয়েছিলেন বছর পঁচিশের টেলিভিশন সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন।

সৌম্যা বিশ্বনাথন। ছবি: সংগৃহীত।

সৌম্যা বিশ্বনাথন। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৫
Share
Save

সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন খুনে চার জনকে যাবজ্জীবন এবং এক জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিল দিল্লির আদালত। দোষীদের মধ্যে রবি কপূর, অমিত শুক্ল, বলজিৎ মালিক এবং অজয় কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অজয় শেট্টি নামে আর এক দোষীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের ব্যাখ্যা, এই মামলাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়, তাই দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সম্ভব হল না। গত ১৯ অক্টোবর রবি, অমিত, বলজিৎ, অজয় কুমার এবং অজয় শেট্টিকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির নিম্ন আদালত।

২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে ফেরার পথে রাত ৩টের সময় দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কাছে খুন হয়েছিলেন বছর পঁচিশের টেলিভিশন সাংবাদিক সৌম্যা। একটি গাড়ির ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সৌম্যার মাথায় গুলির আঘাত ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী জিগীষা ঘোষের মৃত্যুর তদন্তে নেমে সৌম্যার খুনের বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পায় পুলিশ। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁরা সৌম্যার খুনের সঙ্গেও যুক্ত। ২০০৯ সালে পেশ করা ৬২০ পাতার চার্জশিটে দিল্লি পুলিশ জানায় যে, ডাকাতি এবং লুটপাটের জন্যই সৌম্যাকে খুন করা হয়।

হাতের ট্যাটু এবং পুলিশের চুরি যাওয়া ওয়্যারলেস সেটই ধরিয়ে দিয়েছিল দিল্লির সাংবাদিক সৌম্যা এবং তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জিগীষার খুনিদের। এমনটাই জানায় দিল্লি পুলিশ। কী ভাবে এই দুই খুনের যোগসূত্র খুঁজে পেলেন তদন্তকারীরা? সাংবাদিক সৌম্যা খুন হয়েছিলেন ২০০৮ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নেলসন ম্যান্ডেলা পার্কে। তার ঠিক ছ’মাস পর নেলসন ম্যান্ডেলা পার্ক থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসন্ত বিহারে ২০০৯ সালের ১৮ মার্চ বাড়ি ফেরার পথে খুন হন জিগীষা নামে এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী।

বসন্ত বিহার থানার যে দলটি জিগীষার খুনের তদন্ত করছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন অতুল বর্মা। তিনি জানিয়েছেন, তিন অভিযুক্তকে যখন ক্রমাগত জেরা চলছিল, আশ্চর্যজনক ভাবে তাদের মধ্যে রবি নামে এক অভিযুক্ত নেলসন ম্যান্ডেলা পার্কে আরও একটি খুনের কথা স্বীকার করে। শুধু তাই-ই নয়, এই খুনের সঙ্গে যে অজয় কুমার এবং অজয় শেট্টি নামে আরও দু’জন জড়িত ছিল, সে কথাও জানায় রবি।

তার পরই দিল্লি পুলিশের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) এইচজিএস ঢালিওয়াল এসিপি ভীম সিংহের নেতৃত্বে সেই খুনের তদন্তের জন্য একটি দল গঠন করেন। এসিপি ভীম সিংহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “অভিযুক্তেরা সাংবাদিক সৌম্যাকে খুনের কথা স্বীকার করলেও আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ফরেন্সিক প্রমাণ সংগ্রহ করা। তা সংগ্রহ করতেই ঘটনার দিন রাতের তথ্য এক এক করে সংগ্রহ করা শুরু হল।”

এসিপি সিংহ জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ থেকে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সৌম্যা। সেই সময় একটি গাড়িতে যাচ্ছিল রবি, অমিত, বলজিৎ এবং অজয় কুমার। তারা প্রত্যেকেরই মত্ত অবস্থায় ছিল। গাড়ি চালাচ্ছিল রবি। পাশে বসেছিল অমিত। পিছনের আসনে ছিল বলজিৎ এবং অজয়। রবিদের গাড়িকে ওভারটেক করে এগিয়ে গিয়েছিলেন সৌম্যা। এক মহিলা তাদের গাড়িকে ওভারটেক করল, এটা মেনে নিতে পারেনি রবি, বলজিৎরা। তার মধ্যে সৌম্যাকে একা দেখতে পেয়ে তাঁর পিছু ধাওয়া করে রবিরা। তাঁর গাড়িকে ওভারটেক করে আটকানোর চেষ্টা করে তারা। কিন্তু সৌম্যা গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যান। তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় রবি। সেই গুলি মাথায় লাগে সৌম্যার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। সৌম্যার গাড়ি একটি ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। এর পরই পালিয়ে যায় রবি, বলজিৎরা।

Soumya Vishwanathan journalist Murder

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}